তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ড. কামাল হোসেন বিএনপির সঙ্গে গিয়ে সৌজন্যবোধ হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, ড. কামাল বিএনপিকে শেখানোর পরিবর্তে বিএনপির মধ্যে যে অসৌজন্যমূলক আচরণ আছে, সেটির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ রোববার দুপুরে সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের দ্বিতীয় প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় হাছান মাহমুদ এ মন্তব্য করেন। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আলোচনা সভাটির আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সব রাজনীতিবিদের সম্মানে একটি চা-চক্রের আয়োজন করেছিলেন। সেখানে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সেখানে যাননি। তাঁরা যাবেন না, সেটি আবার তাঁরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন।
বিএনপির বিষয়ে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে তারা নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বিএনপি যত দিন বেরিয়ে আসতে পারবে না, তত দিন বিএনপির রাজনীতি হালে পানি পাবে না। আমরা আশা করেছিলাম ড. কামাল হোসেন বিএনপিকে সৌজন্যবোধ শেখাবেন। এখন দেখা যাচ্ছে ড. কামাল হোসেন তাদের সঙ্গে যাওয়ার পর তাঁর নিজের মধ্যে যে সৌজন্যবোধ ছিল, সেটাও হারিয়ে গেছে। তিনি তাদের শেখানোর পরিবর্তে তাদের মধ্যে যে অসৌজন্যমূলক আচরণ, সেটির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন।’
বিরোধীদের রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ রক্ষার আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেক বিরোধীদলীয় নেতাকে দেখি, যাঁরা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানেও অনেক সময় সামাজিকতা রক্ষা করেন না। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়, সামাজিক সৌজন্য, সামাজিক ভদ্রতা আমাদের রক্ষা করতে হবে। রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকবেই। রাজনীতির মাঠে একে অপরের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে সৌজন্যবোধ থাকা প্রয়োজন। এখনকার বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সেটি লক্ষ করি না, যেটি সমীচীন নয়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ঐক্যফ্রন্টের কোনো কিছুর ওপর আস্থা নেই। পুলিশের ওপর তাদের আস্থা নেই, নির্বাচন কমিশনের ওপর তাদের আস্থা নেই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ কারও ওপর তাদের আস্থা নেই। তিনি বলেন, ‘আসলে তাদের নিজেদের ওপর নিজেদের আস্থা নেই। তারা নিজেদের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। আমি তাদের অনুরোধ জানাব, আগে নিজের ওপর নিজের আস্থা স্থাপন করুন।’
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে ধসনামানো বিজয় অর্জন করেছে, তাতে বিএনপি জনগণ থেকে বহু দূরে সরে গেছে। বিএনপি থেকে জনগণের যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, সেটি একমাত্র নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কমানো সম্ভব। তাদের অনুরোধ জানাব, নির্বাচন বর্জন এবং নির্বাচন প্রতিহত করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন, তাহলে আপনাদের রাজনীতিটা টিকবে।’
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি এ টি এম শামসুজ্জামানের সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগের নেতা বলরাম পোদ্দার, মিজানুর রহমান প্রমুখ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।