রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের ১৪ দল–সমর্থিত প্রার্থী রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেছেন, তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আমিনুল হককে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়ার দায়ে এবার মানুষ ভোট দেবে না। ভোটে হেরে গেলেই তিনি পাঁচ বছরের জন্য পালিয়ে যাবেন। তাঁর পালানোরই অসুখ আছে। এর আগে তিনি ১০ বছর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন।
আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরের সাগরপাড়ার বাড়িতে ওমর ফারুক চৌধুরী এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তিনি বলেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আমিনুল হকের জঙ্গিবাদের দায়ে ৩০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। দুর্নীতির দায়ে আরও ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। তিনি এলাকা ছেড়ে ১০ বছর পালিয়েছিলেন। এ রকম একজন প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে তিনি অসম্মানিত বোধ করছেন।
১৪ দলের এই প্রার্থী আরও বলেন, এলাকার ভোটাররা মনে করছেন, নির্বাচনী এলাকার একটি কেন্দ্রেও যদি আমিনুল হক জয়ী হন তাহলে সেই এলাকায় জঙ্গির প্রভাব রয়েছে বলে প্রমাণ হবে। তাই এলাকাবাসী তাঁকে একটি কেন্দ্রেও বিজয়ী হতে দেবে না। অথচ এই প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে তাঁর (ওমর ফারুক চৌধুরী) বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করেই যাচ্ছেন। এই অভিযোগের জবাব দিতে তিনি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন।
বিএনপির প্রার্থী আমিনুল হক অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী দাঁড়িয়ে থেকে বিএনপির পোস্টার ছেঁড়াচ্ছেন, নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করাচ্ছেন। এর জবাবে ফারুক চৌধুরী বলেন, একটি অভিযোগের সমর্থনে একজন মানুষও তিনি হাজির করতে পারবেন না। অভিযোগ করা আর তা প্রমাণ করা এক জিনিস নয়। মিথ্যা কথা বলা তাঁর অভ্যাস হয়ে গেছে। তৃণমূল বিএনপির নেতা–কর্মীরা তাঁর সঙ্গে নেই। কয়েকজন সুবিধাবাদী দালাল থাকতে পারে। এ অবস্থায় নিজের সুবিধার জন্য বিএনপির প্রার্থী যেকোনো সময় যেকোনো সহিংসতা ঘটাতে পারেন। তিনি নিজের জীবনের নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। এ জন্য সাতজন গানম্যান চেয়ে আবেদন করেছেন। প্রশাসন তাঁকে সেই সহযোগিতা দেয়নি। এ জন্য তিনি অসহায় বোধ করছেন। বাধ্য হয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি তুলে ধরছেন।
ওমর ফারুক চৌধুরী অভিযোগ করেন, আমিনুল হকের বহরে ১০–১২টি মাইক্রোবাস থাকছে। তাঁর গাড়ির সামনে শিবিরের ক্যাডাররা নাচানাচি করছে। তার গায়ে তো একটা ফুলের টোকাও পড়েনি। বাংলাদেশে আর কোথাও এ রকম পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে কি না, তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, তিনি প্রশাসনকে বলেছিলেন তাঁর (আমিনুল হক) গাড়িগুলো তল্লাশি করা হোক। গাড়িতে যারা থাকছে, তাদের দেহ তল্লাশি করা হোক। তাহলে তাঁর ‘আর্মস ক্যাডাররা’ ধরা পড়বে। কিন্তু সেটা করা হয়নি। করলে তাদের ধরা যেত।
বিএনপির নেতাদের গাড়িবহর থেকে গ্রেপ্তার করার ব্যাপারে ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, তাঁদের নামে মামলা থাকলে, কোনো অভিযোগ থাকলে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করতেই পারে। তিনি বলেন, একটি গ্রামে জঙ্গিরা বৈঠক করেছে। সে খবর তাঁর নেতা–কর্মীরা তাঁকে দিয়েছেন। তারা যেকোনো ধরনের সহিংসতা ঘটাতে পারে। এ নিয়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে হার-জিত যা–ই হোক, তিনি মেনে নেবেন। তিনি বলেন, আমিনুল হক হেরে গেলে আগামী পাঁচ বছরের জন্য আবার পালাবেন।