লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন করার কোনো পরিবেশই তাঁর এলাকায় নেই। তাঁর এলাকায় পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় শাসক দলের পেটোয়া বাহিনী সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনেও তিনি প্রচার কাজ করতে পারেননি। এ অবস্থায় কেন্দ্র চাইলে নির্বাচন বর্জনকে স্বাগত জানানোর কথা বলেন দলটির কেন্দ্রীয় এই প্রচার সম্পাদক। আর বর্জনের বিষয়ে তাঁর ইচ্ছার কথা তিনি কেন্দ্রকেও জানিয়েছেন।
ভোট বর্জনের জন্য দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটিকে শহিদ উদ্দিন চৌধুরী অবহিত করেছেন বলে বিএনপির একটি সূত্রে জানা যায়। এর সত্যতা জানতে আজ বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তখন তিনি প্রথম আলোকে এসব কথা জানান।
গত সোমবার গণসংযোগের সময় শহিদ উদ্দিন চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় তিন সাংবাদিক, বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ ৩০ জন আহত হন। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শান্তিরহাট বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। শহিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, ‘আমাদের ওপর একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। এলাকায় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করা হচ্ছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ কেউ আমার ফোন ধরছেন না। পুলিশের পক্ষ থেকে আমাকে বের না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’ এ অবস্থায় তিনি নির্বাচন বর্জন করার পক্ষে বলে জানান।
নির্বাচন বর্জন করার বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও জানিয়েছেন এ্যানি। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনা কমিটিকে বলেছি, নির্বাচন করার মতো কোনো পরিবেশ নেই। দেশবাসী এটা দেখছে। আর নির্বাচন বর্জন যে যথাযথ (অ্যাপ্রোপ্রিয়েট), দেশবাসী এটা বিবেচনা করবে। নির্বাচন বর্জন করলেও যা হবে, না করলেও তা হবে।’ তবে তিনি এটাও বলেন, ‘পার্টি যদি বর্জন না করার সিদ্ধান্ত নেয়, যদি মনে করে আমাদের থাকতে হবে, তবে আমি নির্বাচনে থাকব। রক্তাক্ত হয়ে, হামলার শিকার হয়েও থাকব। রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে কেন্দ্রে থাকব। রক্তাক্ত শরীর নিয়েও থাকব।’
শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি দাবি করেন, সংসদ নির্বাচনের বর্তমান অবস্থা নিয়ে দল ও জোটের বিভিন্ন প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তাঁরাও বলেছেন, নির্বাচন করার কোনো পরিবেশ নেই।
তবে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘উনি (এ্যানি) যখন যে সহযোগিতা চেয়েছেন, তা দিয়েছি। গতকালও ওনার সঙ্গে কথা হলো। এত দিন একবারও কোনো অভিযোগ এল না। আজ কেন তিনি অভিযোগ করলেন?’ আজ প্রচার না চালাতে পারার বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আজ সবারই প্রচারণা কম দেখছি। আজ তো কোনো কিছু তিনি (এ্যানি) চালাননি।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেনের দাবি, ‘ওনাকে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার মতো কোনো কথা বলিনি। হামলা-মামলার ঘটনাও সঠিক নয়।’