হবিগঞ্জ-৪ আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও খেলাফত মজলিস কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব আহামদ আবদুল কাদির নির্বাচনী প্রচারণার শেষ মুহূর্তে এসেও বিএনপির কাউকে পাশে পাচ্ছেন না। তাঁকে একাই চলতে হচ্ছে নির্বাচনী মাঠে।
এ আসন থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি এস এম ফয়সলকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী না করায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এর আগে তাঁরা ঐক্যফ্রন্টের এই প্রার্থীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণাও করেন।
হবিগঞ্জ-৪ আসনটি চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে বিএনপি থেকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি এস এম ফয়সল। তিনি এর আগেও এ আসন থেকে তিনবার সংসদ নির্বাচন করেন বিএনপির প্রার্থী হয়ে। কোনোবারই তিনি নির্বাচিত হননি। তবে এবারের নির্বাচনী মাঠ তাঁর অনুকূলে ছিল বলে দাবি বিএনপির নেতা-কর্মীদের। শেষ মুহূর্তে এসে ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রার্থী দেওয়া হয় খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহামদ আবদুল কাদিরকে। তাঁর বাড়ি মাধবপুর উপজেলায়।
বিষয়টি মেনে নেননি বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। ৯ ডিসেম্বর মাধবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওমর আলী খানের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সভায় আহামদ আবদুল কাদিরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তাঁরা। পাশাপাশি গণপদত্যাগের হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এরপর থেকে এ উপজেলায় বিএনপির কেউ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন না। তেমনি চুনারুঘাট উপজেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও নির্বাচনী প্রচারণা থেকে দূরে সরে আছেন। তবে ঐক্যফ্রন্টের এ প্রার্থীর পাশে আছেন তাঁর দল খেলাফত মজলিসের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তাঁদের নিয়েই প্রচারণা চালিয়ে আসছেন আহামদ আবদুল কাদির। এ পরিস্থিতিতে অনেকটা নির্ভার এ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ মো. মাহবুব আলী।
মাধবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওমর আলী খান প্রথম আলোকে বলেন, ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আহামদ আবদুল কাদিরকে এ আসন থেকে প্রার্থিতা দেওয়াটা সঠিক সিদ্ধান্ত হয়নি ঐক্যফ্রন্টের। এখান থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি এস এম ফয়সলকে ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন দিলে তিনি সহজেই পাস করতেন। এবার নির্বাচনী মাঠ তাঁর অনুকূলে ছিল। এ ছাড়া সৈয়দ ফয়সল বিএনপিকে এ এলাকায় সাংগঠনিকভাবে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করে তোলেন। এস এম ফয়সলের মনোনয়ন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন দলে নেতা-কর্মীরা।
চুনারুঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এস এম ফয়সলকে মনোনয়ন না দেওয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের মন ভালো নেই, এটা সত্য। তারপরও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আহামদ আবদুল কাদিরকে আমরা বলেছিলাম, দলের সবাইকে একত্র করার জন্য। তিনি তা করতে পারেননি।’
লিয়াকত হাসান আরও বলেন, ইদানীং দলীয় নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার চলছে। তাতেও তাঁর (আবদুল কাদির) কোনো ভূমিকা নেই। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই প্রার্থীর বিষয়ে জেলা বিএনপির নেতাদেরও কোনো দিকনির্দেশনা নেই, যে কারণে এ দুই উপজেলার বিএনপির নেতা-কর্মীরা নির্বাচনী মাঠে তাঁর পাশে নেই। এ বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহামদ আবদুল কাদিরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেননি।