বাংলাদেশে ছুটিতে থাকা তিন হাজারের বেশি কর্মীর বাহরাইনে ফেরত আসা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বাহরাইন সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মীদের এ দেশে ফেরত আসার বিষয়টি গতকাল মঙ্গলবার (১৬) স্থগিত করেছে। ২২ ও ২৬ জুন ছুটিতে থাকা প্রবাসীদের ফিরতি ফ্লাইটে এ দেশে আসার কথা ছিল। একই কারণে ২২ জুন বাহরাইন থেকে প্রবাসীদের বাংলাদেশে ফেরার বিষয়টিও স্থগিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ও বাহরাইন, দুই দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাহরাইন সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে। এ অবস্থায় অনেক প্রবাসী কর্মী আশঙ্কা করছেন, এখন তাঁরা বাহরাইন আসতে না পারলে তাঁদের ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যেতে পারে।
দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্যগত সমস্যা ও জরুরি প্রয়োজনে প্রায় ৬০০ প্রবাসী বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন। তাঁদের জন্য বাংলাদেশ বিমান ভাড়া করে দূতাবাস। বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালিত ২২ ও ২৬ জুনের বিশেষ দুটি ফ্লাইটে প্রায় ৮০০ প্রবাসীর বাহরাইনে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাহরাইন সরকার তাঁদের ফিরে আসা স্থগিত করেছে। তাদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে প্রবাসীদের বাহরাইনে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি স্থগিত করা হয়েছে। এ কারণে পূর্ব ঘোষিত ২২ জুন বাংলাদেশ বিমানের মাধ্যমে বাহরাইন থেকে বাংলাদেশে প্রবাসীদের ফিরিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও স্থগিত করা হয়েছে।
দূতাবাস সূত্র বলছে, স্বাস্থ্যগত সমস্যা ও জরুরি প্রয়োজনে অনেক প্রবাসীর বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া প্রয়োজন। তাই দূতাবাস চেষ্টা করে যাচ্ছে যাতে বাংলাদেশ বিমান অন্তত বাহরাইন থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে, এতে বাহরাইনে আটকা পড়া প্রবাসীরা দেশে ফেরার সুযোগ পাবেন।
এ ব্যাপারে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘শুধু বাহরাইন থেকে বাংলাদেশ রুটে যাত্রী পরিবহনের জন্য এটি বাণিজ্যিকভাবে কতটা উপযোগী, সেই বিষয়টি বাংলাদেশ বিমান বিবেচনা করছে। আমরা বাংলাদেশ বিমানের সঙ্গে দর-কষাকষি অব্যাহত রেখেছি, বিমানের ভাড়া বৃদ্ধি হলেও তা যেন প্রবাসীদের সামর্থ্যের মধ্যে থাকে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে বাহরাইন সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে পরে করণীয় জানিয়ে দেওয়া হবে। টিকিট, স্বাস্থ্যসনদসহ প্রয়োজনীয় বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, আগে ওই বিশেষ ফ্লাইটে চড়ে বাহরাইন আসার জন্য জনপ্রতি ভাড়া নির্ধারিত ছিল ৪২ হাজার টাকা। আর বাহরাইন থেকে যাঁরা দেশে ফিরবেন, তাঁদের প্রত্যেকের জন্য ভাড়া নির্ধারিত ছিল ৩৫ হাজার টাকা।
দূতাবাস সূত্র জানায়, যাঁরা ইতিমধ্যে দূতাবাসে তাঁদের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন, কেবল তাঁদেরই বিমানযাত্রী হিসেবে বিবেচনার মধ্যে রাখা হবে। নতুন করে কারও নাম তালিকাভুক্ত করা হবে না।
দূতাবাস সূত্র বলছে, আশার কথা হলো, যেসব প্রবাসী বাংলাদেশ থেকে বাহরাইনে ফিরতে চান, তাঁদের ব্যাপারে দূতাবাসের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাহরাইন সরকার আশ্বাস দিয়েছে, বিমান চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় এলে তাঁদের ফিরে আসার বিষয়ে তারা ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে।