সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় এক রাতে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল তিন ছাত্রী। এই তিন ছাত্রীর মধ্যে দুজন অষ্টম ও একজন দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম মো. আনিসুর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালতের পৃথক অভিযান পরিচালনা করে এসব বিয়ে বন্ধ করেন। দুই কনের বাবা ও দুই বরের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন আদালত।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের একটি গ্রামে বাল্যবিবাহ হচ্ছে জেনে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিয়েবাড়িতে এসে দেখা যায়, কনে (১৬) স্থানীয় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বর শিহাব আলী (২০) পাশের বালিঘুগরি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। এ সময় কৌশলে বিয়ের আসর থেকে কাজি পালিয়ে যান। বর-কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গেছে, এর আগে বহুলী ইউনিয়নের একটি গ্রামে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত এক ছাত্রীর বিয়ে হচ্ছে জেনে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিয়েবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কনে (১৩) স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বর নুরনবী (২১) ও কনের বাবাকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই দিন বিকেলে উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে চালানো অভিযানে দেখা যায়, কনে (১৩) স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বর রেজাউল করিম (৩১) ও কনের বাবাকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
তিন ঘটনাতেই বর-কনে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাদের বাবা-মায়েরা বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছেন। অভিযানে সহায়তা করেন কালিয়া হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুস সবুর শেখ, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আরমান আলী, আনসার বাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম মো. আনিসুর রহমান আজ শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, এসব ছাত্রীর পরিবার আবার যেন বিয়ের ব্যবস্থা করতে না পারে সে জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নজর রাখতে বলা হয়েছে।