মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাঁর দুই সন্তানকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মাহমুদার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের বাবা আবদুল ওয়াদুদ ও ভাই হাবিবুর রহমানকে এই আদেশ দেওয়া হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রামের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিল বাবুল আক্তারের বড় ছেলে। আর পরিবারের সদস্য হিসেবে ছোট মেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী।
পিবিআই আমাদের লিখিত কোনো কিছু বলেনি বাবুলের দুই সন্তানকে হাজির করতে। আদালতের আদেশটি আমরা এখনো পাইনি। তারা (বাবুলের দুই সন্তান) কোথায় আছে জানি না। খোঁজ নেব।বাবুলের ভাই হাবিবুর রহমান
আলোচিত এই মামলার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য এই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। মামলায় বাবুল আক্তার যে ঠিকানা দিয়েছেন, সেখানে তাঁর দুই সন্তানকে পাওয়া যায়নি। তাঁর শ্বশুরের কাছেও তারা নেই। গুরুত্বপূর্ণ এই দুই সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুলের বাবা ও ভাইকে কয়েকবার মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৭ মে হাবিবুর রহমানকে বলা হয়, ১৩ জুন দুই সাক্ষীকে হাজির করতে। কিন্তু হাজির করেননি। তাই দুই সাক্ষীকে আদালতে হাজির করতে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। আদালত আদেশ দিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে দুই সাক্ষীকে হাজির করতে।
২০১৬ সালের ৫ জুন বড় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় মাহমুদাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ছিল ১২ বছর বয়সী বড় ছেলে। মাহমুদা হত্যাকাণ্ডের পর বাবুল বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। ডিবি পুলিশের পর গত বছরের মে মাস থেকে মামলাটি তদন্ত শুরু করে পিবিআই। চলতি বছরের ১২ মে এই মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। এতে বলা হয়, তিন লাখ টাকা দিয়ে স্ত্রীকে খুন করান বাবুল। ওই দিন বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে বাবুলসহ আটজনকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এই মামলায় বাবুলকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাবুলকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। ১৭ মে থেকে কারাগারে আছেন বাবুল।
বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর দুই নাতি–নাতনিকে উদ্ধারের জন্য ঢাকায় পারিবারিক আদালতে মামলা করেছেন। আদালত দুই সন্তানকে উদ্ধারের নির্দেশ দিলেও পুলিশ তাদের খুঁজে পাচ্ছে না। তাদের লুকিয়ে রেখেছেন বাবুলের বাবা, ভাই।
জানতে চাইলে আজ রাতে মুঠোফোনে বাবুলের ভাই হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পিবিআই আমাদের লিখিত কোনো কিছু বলেনি বাবুলের দুই সন্তানকে হাজির করতে। আদালতের আদেশটি আমরা এখনো পাইনি। তারা (বাবুলের দুই সন্তান) কোথায় আছে জানি না। খোঁজ নেব।’