বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম শামুকঝিরি এলাকায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জুম চাষ করে বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ সময় ওই নারীর সঙ্গে থাকা তাঁর চার বছরের ছেলের পায়ে গুলি লেগেছে। শিশুটিকে বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়নের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'জনসংহতি সমিতির মূল দলের সন্ত্রাসীদের অবস্থান জানতে পেরে অংগ্যপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর তিনটি টহল দল অবস্থান নেয়। সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পশ্চিমের পাহাড় থেকে এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়। সেনাবাহিনীর সদস্যরা সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে এবং এলাকাটিতে অনুসন্ধান চালিয়ে একজন নারী ও শিশুকে আহত অবস্থায় দেখতে পায়। তাদের দুজনকে উদ্ধার করে সেনা অ্যাম্বুলেন্সে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে নারীর মৃত্যু হয়।'
ওই নারীর নাম শান্তিলতা তঞ্চঙ্গ্যা (৩০)। তাঁর আহত ছেলে ছয় বছরের অর্জুন তঞ্চঙ্গ্যা।
ওই নারীর স্বামী রাঙায়ে তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, তাঁরা নাইতিংঝিরি পুনর্বাসন পাড়ার বাসিন্দা। তবে অংগ্যপাড়া পার হয়ে শামুকঝিরিমুখ এলাকায় জুম চাষ করেন। শামুকঝিরিমুখ এলাকাটি রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে তারাছা খালের পাশে অবস্থিত। গতকাল বিকেলে জুম থেকে বাড়ি ফেরার পথে তিনি প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে যান। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও ছেলে কিছু দূর এগিয়ে যান। গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে তিনি আতঙ্কে আর সামনে না গিয়ে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকেন। গুলির শব্দ থেমে যাওয়ার পর তিনি নাইতিংঝিরিতে বাড়িতে ফিরে যান। স্ত্রী ও ছেলের বিষয়ে তিনি তখন জানতে পারেন।
অংগ্যপাড়ার বাসিন্দা ও রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য অংসিংনু মারমা বলেন, শামুকঝিরিমুখ এলাকায় গুলির শব্দ শোনা গেছে। তখন তাঁদের পাড়ায় অবস্থান নিয়ে থাকা সেনাবাহিনীর একটি দলও গুলি চালায়। রাতে শান্তিলতা ও তাঁর ছেলেকে সেনাবাহিনী উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ কবীর বলেছেন, সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির মাঝে পড়ে শান্তিলতা তঞ্চঙ্গ্যা ও তাঁর ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পরে শান্তিলতার মৃত্যু হয়েছে।