বাজারে গেলে মনে হয় না দেশে সরকার আছে

মুজিবুল হক ও হারুনুর রশীদ
মুজিবুল হক ও হারুনুর রশীদ

নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন বিরোধী দলের দুই সদস্য। তাঁরা বলেছেন, বাজারে গেলে মনে হয় না দেশে সরকার আছে, সরকারের নিয়ন্ত্রণ আছে। সরকার নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।

গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাংসদ মুজিবুল হক ও বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ।

মুজিবুল হক বলেন, দেশে উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে মানুষের মধ্যে হাহাকার তৈরি হয়েছে। বাজারে গেলে মনে হয় না সরকার আছে, সরকারের নিয়ন্ত্রণ আছে।

বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবন দুর্বিষহ। এক কোটি পরিবারকে টিসিবির পণ্য দেওয়া হচ্ছে। তেল, ডাল, খেজুর, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন কিছু দিয়ে প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। এই প্যাকেজ কিনতে গরিব মানুষকে বাধ্য করা হচ্ছে। কারও হয়তো শুধু ডাল দরকার, খেজুর দরকার নেই। কিন্তু তিনি চাইলেও শুধু ডাল নিতে পারছেন না।

রড, সিমেন্ট, ইট, বালুসহ নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন নির্মাণকাজ স্থবির হয়ে পড়েছে বলেও উল্লেখ করেন সাংসদ হারুন। সম্প্রতি পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) দেওয়া একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আইজিপি যে ভাষায় কথা বলছেন পুলিশের পোশাক পরে, এ ভাষায় তিনি কথা বলতে পারেন না। এ ধরনের কথা বলতে হলে আইজিপিকে পুলিশের পোশাক ছেড়ে রাজনীতিতে নামার আহ্বান জানান তিনি।

পয়েন্ট অব অর্ডারে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেন, এক যুগ ধরে দেখা যাচ্ছে অপরাধ ঘটলে বিশেষ করে হত্যাকাণ্ড হলে মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান। অথচ ফৌজদারি অপরাধ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ। স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই অপরাধের বিচার হওয়ার কথা। কিন্তু সেটা হয় না। মানুষ বিচার চান নির্বাহী বিভাগের প্রধানের কাছে।

রুমিন ফারহানা বলেন, সব হত্যাকাণ্ড সমানভাবে আলোচনায় আসে না। ভুক্তভোগী ভাগ্যবান হলেই কেবল সেটা নিয়ে শোরগোল হয়।

রুমিন ফারহানা বলেন, সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পতি হত্যার পর ৮৭ বার সময় নিয়েছে পুলিশ। এখনো চার্জশিট দেয়নি। নারায়ণগঞ্জের ত্বকী হত্যার ঘটনায় ৯ বছরেও চার্জশিট দিতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ আছে এই হত্যাকাণ্ডে নারায়ণগঞ্জের একটি প্রভাবশালী পরিবার যুক্ত।

রুমিন ফারহানা বলেন, সম্প্রতি কলেজছাত্রী সামিয়া হত্যার (গত বৃহস্পতিবার রাতে শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত) পর তাঁর মা–বাবা বলেছেন, তাঁরা বিচার চান না। আওয়ামী লীগের নিজস্ব খুনোখুনির মধ্যে সামিয়া হত্যার শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিএনপির এই সাংসদ বলেন, এখন মানুষ এ দেশে নাগরিক নয়, প্রজার মতো হয়ে গেছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে তিনি বা তাঁর পরিবারের কেউ হত্যার শিকার হলেও বিচার পাবেন না।