চার দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে আজ সোমবার সকালে দেশে ফিরে গেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। ঢাকা ও থিম্পুর মধ্যে আরও যোগাযোগ ও ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা অনুসন্ধানের লক্ষ্যে এই সরকারি সফর করেন তিনি।
লোটে আজ সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ড্রুক এয়ার ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এম এনামুর রহমানসহ অন্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা লোটে শেরিংকে বিমানবন্দরে বিদায় জানান।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত বছর দায়িত্ব গ্রহণ করেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র লোটে শেরিং। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লোটে শেরিং বাংলাদেশে প্রথম সফর করেন।
সফরকালে বাংলাদেশ ও ভুটানের দুই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। গত শনিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আন্তরিক পরিবেশে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটে।
পারস্পরিক স্বার্থে দুটি দেশের বাজারে বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের অনুমতি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ও ভুটান নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।
পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক জানিয়েছেন, ভুটান বাংলাদেশের বাজারে ১৬টি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের দাবি করেছে। দুই দেশের আনুষ্ঠানিক আলোচনার সময় বাংলাদেশ ভুটানের বাজারে ১০টি পণ্যের প্রবেশাধিকার চেয়েছে।
দুই দেশের নেতৃবৃন্দ চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
উভয় প্রধানমন্ত্রী বিগত দশকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছার বিষয়টি স্বীকার করেন। বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী ও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পর বাংলাদেশ ও ভুটান স্বাস্থ্য, কৃষি, শিপিং, পর্যটন ও জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতার জোরালো করার জন্য পাঁচটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া নৈশভোজ অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।
এ ছাড়া ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য ও নৌপরিবহনমন্ত্রীদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন। তিনি এফবিসিসিআই নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। তিনি এ সময় বলেন, ভুটান বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্ক বিকাশে অত্যন্ত আগ্রহী। তাঁর দেশে আরও বাণিজ্য সম্ভাবনা অনুসন্ধান করতে চায়।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী রাজধানীতে নববর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান। এই সফরকালে তিনি গতকাল রোববার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে যান।