প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে সফলভাবে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক এম এ খান এবং যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের চিকিত্সক বিমলাংশু দের নেতৃত্বে চিকিত্সকদের একটি দল এই প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করে।
বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আশা করছি বাংলাদেশে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের দুর্দিন বিদায় হলো। বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যানটেশনের মাধ্যমে শুধু ব্লাড ক্যানসার নয়, থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীরাও নতুন জীবন লাভ করতে পারবেন। স্বদেশে সহজে-সুলভে এখান থেকে রোগীরা চিকিত্সাসেবা পাবেন।’
যাঁর শরীরে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে তিনি ৫২ বছর বয়সী একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। মাল্টিপলমাইলোমা নামক ব্লাড ক্যানসারে ভুগছেন তিনি। দুই সপ্তাহের মধ্যেই তিনি বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। চিকিত্সকেরা বলছেন, ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের পর রোগী পুরোপুরি ভালো হয়ে যান।
রক্তরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এ খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের পর রোগী খুব নাজুক অবস্থায় থাকেন। আজ যাঁর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হলো তিনিও খুব ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। আমরা সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।’
ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক বিমলাংশু দে বলেন, তিন বছর ধরে বাংলাদেশে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলেছে। বাংলাদেশের চিকিত্সক ও তাঁদের সহযোগীরা তিন বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নানা প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। মার্কিন বিশেষজ্ঞ দলও একাধিকবার বাংলাদেশে এসেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই ইউনিটটি যেকোনো বিবেচনায় বিশ্বের যেকোনো শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তুলনীয়।
বাঙালি বংশোদ্ভূত এই মার্কিন চিকিত্সক বাংলাদেশে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নিতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অব্যাহতভাবে সহযোগিতা করার ব্যাপারে তিনি নিজের কাছে ‘প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনে অংশগ্রহণকারী চিকিত্সক ও তাঁদের সহযোগীদের করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়।