বাংলাদেশের অনুরোধে আটক খায়রুজ্জামান: মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

এম খায়রুজ্জামানকে দেওয়া ইউএনএইচসিআরের কার্ড
ছবি: এফআইডিএইচ এশিয়া ডেস্কের পরিচালকের টুইটার

মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজা জয়নুদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশের অনুরোধে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম খায়রুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হামজা জয়নুদ্দিন এসব তথ্য জানান।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনারকে আটকের এক দিন পর মালয়েশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করল। অবশ্য কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কিছু জানায়নি।

মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ গতকাল বুধবার সকালে এম খায়রুজ্জামানকে সেলাঙ্গর প্রদেশের আমপাং এলাকা থেকে আটক করেছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন শেষে এক যুগের বেশি সময় ধরে দেশটিতে শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন খায়রুজ্জামান।

খায়রুজ্জামানের আটকের বিষয়টি জানেন কি না, সংবাদ সম্মেলনে এমন এক প্রশ্নের উত্তরে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজা জয়নুদ্দিন বলেন, ‘আমি অবশ্যই তাঁর আটকের বিষয়টি সম্পর্কে জানি। বিধি মেনেই তাঁকে আটক করা হয়েছে।’

বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনারকে আটকের কারণ জানতে চাইলে হামজা জয়নুদ্দিন জানান, বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততার জন্য তাঁকে (খায়রুজ্জামান) আটকের জন্য বাংলাদেশ অনুরোধ জানিয়েছিল।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা খায়রুজ্জামান ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন। ওই হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি মিয়ানমার, মিসর ও ফিলিপাইনে তিনি বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাঁকে অবসরে পাঠানোর পাশাপাশি জেলহত্যা মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি জামিনে বের হয়ে আসেন। এরপর চাকরি ফিরে পেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। ২০০৪ সালে তিনি জেলহত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি লাভ করেন। ২০০৫ সালে তিনি মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিয়োগ পান।

এম খায়রুজ্জামান ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেয়।

সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করে খায়রুজ্জামান মালয়েশিয়ায় থেকে যান। দেশে ফিরলে বিপদে পড়বেন—এ আশঙ্কা থেকে এক যুগের বেশি সময় আগে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার কাছ থেকে শরণার্থী কার্ড নিয়ে দেশটিতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেন।