মালয়েশিয়ায় একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশি ও নেপালি শ্রমিকেরা তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। বিষয়টি জেনে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার সরকার। আজ শুক্রবার দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এই ঘোষণা আসে।
ডব্লিউআরপি নামের ওই কোম্পানিটি যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য খাতে রাবারের দস্তানা সরবরাহকারী অন্যতম প্রতিষ্ঠান। মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয় মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, কোম্পানিটি গত নভেম্বর মাস থেকে এর কয়েক হাজার বাংলাদেশি ও নেপালি শ্রমিকের বেতন ও ওভারটাইম ভাতা বন্ধ রেখেছে। সম্প্রতি কোম্পানিটি সরকারের কাছে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেতন-ভাতা না পাওয়ায় দুই হাজার নেপালি শ্রমিক তিন দিনের ধর্মঘট গত মঙ্গলবার শেষ করে। এরপর দেশটির সরকার কোম্পানিটির বিরুদ্ধে পুনরায় তদন্তে নামে। মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবারের মধ্যে কোম্পানিটির তিন মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের কথা ছিল।
মূলত গত ডিসেম্বরে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান মালয়েশিয়ার ওই কোম্পানিকে নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে উঠে আসে শ্রম-পরিবেশের ভয়াবহ সব তথ্য। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখানে শ্রমিকদের জোরকরে পরিশ্রম করানোর পাশাপাশি বাধ্যতামূলক ওভারটাইম করানো হচ্ছিল। একই অভিযোগ করা হয় সেখানকার টপ গ্লোব নামের আরেকটি কারখানার বিরুদ্ধেও।
গার্ডিয়ানের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ডব্লিউআরপি তাদের শ্রমিকদের এমন একটি হোস্টেলে রাখছে যেখানে ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮০০ জনের। অথচ সেখানে তিন হাজারেরও বেশি শ্রমিককে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি শ্রমিকেরা যে ওভেনের কাছে কাজ করেন ওই কক্ষের তাপমাত্রা ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে সে সময় ডব্লিউআরপির প্রধান নির্বাহী লি সং হং সে সময় তাঁদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত মঙ্গলবারের শ্রমিক ধর্মঘটের পর কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ ও নেপাল দূতাবাসের বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকে গতকাল বৃহস্পতিবার বকেয়া পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, তারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। তাই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তবে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে শ্রম আইনের কোন ধারায় অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা তারা নির্দিষ্ট করে বলেনি।