আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘রাজশাহীতে দুজন আদিবাসী কৃষকের আত্মহত্যা এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ পরিস্থিত ও পানি ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় আলোচকেরা
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘রাজশাহীতে দুজন আদিবাসী কৃষকের আত্মহত্যা এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ পরিস্থিত ও পানি ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় আলোচকেরা

বরেন্দ্রের সেচের পানি নির্ভর করে অপারেটরদের খেয়ালখুশির ওপর

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) ১৬ হাজার গভীর নলকূপ রয়েছে। এসব গভীর নলকূপ পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের কোনো তদারকি নেই। কৃষকের পানি পাওয়া নির্ভর করে অপারেটরদের খেয়ালখুশির ওপর। এই অব্যবস্থাপনার সবচেয়ে বেশি শিকার প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কৃষকেরা।

জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ বুধবার ‘রাজশাহীতে দুজন আদিবাসী কৃষকের আত্মহত্যা এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ পরিস্থিত ও পানি ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলা হয়। আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক সংসদীয় ককাস এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মূল বক্তব্যে ককাসের টেকনোক্র্যাট সদস্য ও সমন্বয়ক মেসবাহ কামাল বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে গভীর নলকূপের পানি সরবরাহব্যবস্থা দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। ঘণ্টায় ১১৫ টাকা নেওয়ার নিয়ম থাকলেও কয়েক গুণ বেশি নেওয়া হয়। যাঁদের জমি পাঁচ বিঘার কম, তাঁরা গভীর নলকূপের পানি পাবেন না, এমন কথাও প্রচার আছে। তিনি বলেন, এমন অব্যবস্থাপনায় সাঁওতাল কৃষক রবি মারান্ডি ও অভিনাথ মারান্ডি আত্মহত্যার বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কৃষকেরা দীর্ঘদিন ধরে যে বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন, এটি তার বহিঃপ্রকাশ।

বিএমডিএ যে পদ্ধতিতে সেচব্যবস্থা চালাচ্ছে, তা অকার্যকর বলে উল্লেখ করেন আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ মরুকরণের দিকে যাচ্ছে। বরেন্দ্র এলাকায় ১ হাজার ৬০০ ফুট নিচেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বিএমডিএর সেচব্যবস্থাপনা ও চিন্তায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।

দুই সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনা অশনিসংকেত বলে উল্লেখ করেন ককাসের সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। কোন পরিস্থিতিতে দুই সাঁওতাল কৃষককে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল তা বের করতে তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান।

সভায় প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, সমকাল–এর উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, বেসরকারি সংস্থা হেকস ইপারের ব্যবস্থাপক সাইবুন নেসা, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নেতা গনেশ মাঝি, বিমল চন্দ্র রাজওয়াড় ও ডিস্ট্রিক্ট প্লাটফর্ম এনএনএমসির চেয়ারপারসন এস এম আশরাফুল হক উপস্থিত ছিলেন। সভা সঞ্চালনা করেন আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক সংসদীয় ককাসের যুগ্ম সমন্বয়ক জান্নাত–এ–ফেরদৌসী।