বরিশালে বানারীপাড়া-বরিশাল সড়কে দুর্ঘটনায় জড়িত বাসটির চালক আবদুল জলিলকে (৩২) গতকাল শুক্রবার রাতে আটক করেছে পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আকস্মিকভাবে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব সড়কপথে বাস ধর্মঘট আহ্বান করেছেন শ্রমিকেরা।
বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে জড়ো হয়ে শ্রমিকেরা এই ধর্মঘটের ডাক দেন। এতে সব সড়কপথে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দূরপাল্লার বাসের টিকিট বিক্রিও বন্ধ করে দেন তাঁরা।
একই সঙ্গে শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরাও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।
গতকাল ওই দুর্ঘটনায় বিএম কলেজ ছাত্রীসহ সাতজন নিহত হন। এর মধ্যে তিনজন নারী ও এক শিশু রয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে মহানগর পুলিশের প্রতিনিধি, বিআরটিএ এডি, বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান।
বরিশাল বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান মুকুল জানান, গতকাল রাত পৌনে আটটার দিকে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আরজি কালিকাপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে বাসচালক জলিলকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘চালককে আটকের ঘটনায় শ্রমিকেরা বাস ধর্মঘট আহ্বান করেছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা আলোচনায় বসছি।’
গতকাল সকাল পৌনে ১০টার দিকে বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ থেকে যাত্রী নিয়ে তিন চাকার একটি যান (মাহেন্দ্র) বানারীপাড়া যাচ্ছিল। এ সময় বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের গরিয়ারপাড় এলাকার তেঁতুলতলায় বানারীপাড়া থেকে বরিশালে উদ্দেশে ছেড়ে আসা দুর্জয় পরিবহন নামের যাত্রীবাহী একটি বাসের সঙ্গে মাহেন্দ্রটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত এবং ১০ জন গুরুতর আহত হন। পরে আহত ব্যক্তিদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর পাঁচজন এবং বিকেলে ঢাকায় নেওয়ার পথে এক শিশুর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর বাসটির চালক দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে বাস নিয়ে সটকে পড়েন। পরে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে পুলিশ বাসটি জব্দ করলেও এর চালক ও সহকারী পালিয়ে যান।