বন্যাকবলিত এলাকায় নিত্যপণ্যের দাম চড়া

নিত্যপণ্য
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমছে। বাড়ছে উত্তরাঞ্চলে। বন্যাকলিত মানুষের বাড়িতে খাদ্য ফুরিয়ে গেছে আগেই। ত্রাণসহায়তাও অপ্রতুল। এমন পরিস্থিতির মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে।

বাজারে ঘুরে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে বন্যার আগে ২৫ টাকা কেজির আলু এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ছিল ১২০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। আর চাল কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।

সুনামগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া গতকাল বুধবার বলেন, কিছু দোকানি অমানবিক আচরণ করেছেন। শনি ও রোববার অনেক বেশি দামে পণ্য বিক্রি করেছেন। প্রশাসনের উচিত বাজার তদারকি করা।

সুনামগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের অফিসটাই পানির নিচে ছিল। এত দিন বের হতে পারিনি। আমরাও এ রকম অভিযোগ পাচ্ছি। বৃহস্পতিবার থেকে বাজার তদারকিতে মাঠে নামব।’

গতকাল বিকেলে সিলেটের ব্রহ্মময়ী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫২ থেকে ৫৫, আলু ২৮ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০ দিন আগেও প্রতি কেজি আলু ২০ থেকে ২২ এবং প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। শুকনা খাবারের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি মুড়ি ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৮০ টাকায় এবং চিড়া প্রতি কেজি ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সিলেট ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, বাজারে যাতে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করা না হয়, সে জন্য মনিটরিং বাড়ানো হচ্ছে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সবজির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। গতকাল মানিকদাইড় বাজারের আনোয়ার স্টোরের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, গতকাল মোটা মসুর ডাল ১২০, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১২০ ও মুড়ি ৬২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে এই বাজারে প্রতি কেজি মসুর ডাল ১১৫, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৪০ টাকা ও মুড়ি প্রতি কেজি ৫৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কুড়িগ্রামের বন্যাকবলিত রৌমারীর খেওয়ারচর বাজারে গতকাল গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ও পটোল ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৪০ ও পটোল ২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কয়েক দিন আগেও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি শসা বিক্রি হতো ৩৫ টাকায়, এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও বেগুনের কেজি ছিল ৩০ টাকা। ৪০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া ও সুনামগঞ্জ এবং প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম, সিলেট, সিরাজগঞ্জ ও রায়গঞ্জ)