লোকালয়ের মাঝে ৪০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে ছিল বটগাছটি। বটগাছের অঙ্গে জড়িয়ে ছিল ৩০০ বছরের এক পাকুড়গাছ। বট-পাকুড়ের এ মিলনকে অমর করতে গাছ দুটোর বিয়ে দিয়েছিলেন হিন্দু এক জোতদার। সেই থেকে এলাকার হিন্দুদের কাছে ঝাউঘেরা বট-পাকুড়গাছটি দেবতাতুল্য। সারা বছর এ গাছের পাশে পূজা করতেন এলাকাবাসী। গাছের গায়ে এতটুকু আঁচড় পড়তে দিতেন না কেউ। কিন্তু ৪০০ বছরের স্মৃতির সাক্ষী গাছটি চার দিন আগে ঝড়ে উপড়ে গেছে।
বগুড়ার সদর উপজেলার সাবগ্রাম পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির বট-পাকুড়ের জোড়া গাছটি উপড়ে পড়ে আছে একটি বসতবাড়ির ওপর। লোকজনের ভিড় লেগেই আছে সেখানে। স্থানীয় লোকজন জানান, ঝড়ে এই গাছটি পড়ে গেছে। ওই বাড়ির লোকজন সে সময় বেড়াতে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান তাঁরা।
প্রাচীন এ গাছ দুটি একসঙ্গে হারিয়ে গ্রামের বাসিন্দারা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন। সাবগ্রাম পালপাড়ার বঙ্ক পালের বয়স এখন ৮৫ পেরিয়েছে। গাছটার বয়স কত? জিজ্ঞাসা করতে তিনি উত্তর দেন, বটগাছটার বয়স সঠিক কত সেটা অজানা। তবে পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে শুনেছেন, আট পুরুষ ধরে গাছটা এভাবেই দাঁড়িয়ে আছে।
পালপাড়ার বৃদ্ধ অশ্বিনী কুমার পাল (৭৫) বলেন, তিনি দাদার কাছে শুনেছেন দেবতা মেনে পূজা শুরু হয়েছিল রবি চান পালের হাত ধরে। রবি চান পালের দুই নাতি রামচন্দ্র পাল ও গয়নাথ পাল পাকুড়গাছের সঙ্গে বটগাছের বিয়ে দেন।
গাছের পাশেই বসবাস করেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা স্বপন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, তাঁর এ বাড়িতে বসবাস করতেন কৃষ্ণ চন্দ্র পাল নামের এক জোতদার। তিনি অনেক আগেই ভারতে চলে গেছেন। তবে এ গাছের নামে চার শতক জায়গা অর্পণ করে (ওয়াক্ফ) গেছেন।
পালপাড়ার বাসিন্দা বিনয় চন্দ্র পাল বলেন, পালপাড়ার প্রতিটি মানুষের কাছে জোড়া বট-পাকুড়গাছটি পরিবারের মতোই আপন।