বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ বৃহস্পতিবার ফ্রান্স থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পাঠানো হচ্ছে। আগামী মাসে ফ্লোরিডা থেকে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে এই স্যাটেলাইট।
প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মেসবাহুজ্জামান বুধবার বাসসকে বলেন, প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস বৃহস্পতিবার সকালে ফ্রান্সের কানে অবস্থিত ওয়ারহাউস থেকে একটি বিশেষ কার্গো বিমানে করে স্যাটেলাইটটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা পাঠাবে।
প্রকল্প পরিচালক জানান, উৎক্ষেপণের দায়িত্ব পাওয়া মার্কিন ফার্ম স্পেসএক্স ৩০ মার্চ উপগ্রহটি গ্রহণ করে উৎক্ষেপণের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করবে।
থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস কয়েক মাস আগে ৩ দশমিক ৭ টন ওজনের ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’-এর প্রস্তুতের কাজ শেষ করে ফ্রান্সের কানে একটি ওয়ার হাউসে রাখে।
উৎক্ষেপণের সম্ভাব্য তারিখ সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘স্পেসএক্স স্যাটেলাইটটি গ্রহণ করে তিন-চার দিনের মধ্যে আমাদের উৎক্ষেপণের সম্ভাব্য তারিখ জানাবে।’
যে রকেটের মাধ্যমে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করা হবে, সেটি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মেসবাহুজ্জামান বলেন, রকেটটি তৈরির কাজ দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে এবং কয়েক দিনের মধ্যে এটির প্রস্তুতকরণের কাজ শেষ হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটি রকেট ব্যবহার করছি। তাই উৎক্ষেপণের জন্য আমাদের একটু সময় লাগছে। পুরোনো রকেট ব্যবহার করা হলে অনেক কম সময় লাগত।’
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরাল থেকে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হবে। এটি ১১৯ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায় এর জন্য নির্ধারিত স্লটে পৌঁছাতে আট দিন সময় নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ‘ফ্যালকন-৯’ রকেটে করেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে পাঠানো হবে।
এর আগে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে। বাকি ২০টি ট্রান্সপন্ডার বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির জন্য রাখা হবে।
স্যাটেলাইটটি ১৫ বছর মেয়াদের মিশনে পাঠানো হচ্ছে।
এই কৃত্রিম উপগ্রহটি টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও বেতারসহ ৪০ ধরনের সেবা দেবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ টেরেস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা বহাল থাকা, পরিবেশ যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে ই-সেবা নিশ্চিত করবে।
স্যাটেলাইটের কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে শুরু হলে আশপাশের কয়েকটি দেশে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার সেবা দেওয়ার জন্য জিয়োসিক্রোনাস স্যাটেলাইট সিস্টেমের (৪০ ট্রান্সপন্ডার, ২৬ কেইউ ব্র্যান্ড, ১৪ সি ব্যান্ড) গ্রাউন্ড সিস্টেমসহ সব ধরনের সেবা পাওয়া যাবে।