একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ায় সাতটি আসনে প্রাপ্ত ভোটের ১০ শতাংশের কম ভোট পাওয়ায় ৪৭ প্রার্থীর মধ্যে ৩৪ জনই জামানত খুইয়েছেন। জামানত হারানো প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন বিএনপির একাধিক সাবেক সাংসদ। জামানত রক্ষা করতে পারেননি আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমও। মহাজোট সমর্থিত পরাজিত তিন প্রার্থীর একজন জামানত খুইয়েছেন।
জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুব আলম শাহ বলেন, কোনো প্রার্থী প্রাপ্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পেলে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এই হিসাবে বগুড়ায় সাতটি আসনে ৩৪ জনে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এ বি এম মোস্তাফা কামাল পাশা (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তবিবর রহমান মণ্ডল (কলার ছড়ি) জামানত হারিয়েছেন। এই আসনে মোট ভোট পড়েছে ২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৭০। এর মধ্যে কামাল পাশা পেয়েছেন ৮১৮ এবং তবিবর পেয়েছেন ৬৭১ ভোট।
বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে ভোট পড়েছে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬৭টি। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জামাল উদ্দিন (হাতপাখা) ১ হাজার ২৮৫ ভোট পেয়ে এবং মুসলিম লীগের শফিকুল ইসলাম (হারিকেন) ৫২৭ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসনে ভোট পড়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৯৩৭ ভোট। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শাহজাহান আলী তালুকদার (হাতপাখা) ৩ হাজার ১৫৪ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন (আপেল) ১ হাজার ৯২ ভোট, আবদুল মজিদ (ডাব) ১ হাজার ৫৮ ভোট, নজরুল ইসলাম (মোটরগাড়ি) ৪০৩ ভোট, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির লিয়াকত আলী (কোদাল) ৪৫৪ ভোট এবং বিএনএফের আবদুল কাদের জিলানী ৪০৩ ভোট পেয়ে জামানত খুইয়েছেন।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে ভোট পড়েছে ২ লাখ ২১ হাজার ৩৩০ ভোট। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইদ্রিস আলী (হাতপাখা) ৫ হাজার ২৪৭ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম (সিংহ) ৬৩৮, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আয়ুব আলী (টেলিভিশন) ৩৬১ ভোট, তরীকত ফেডারেশনের কাজী এম এ কাশেম (ফুলের মালা) ৩১৩ ভোট এবং বিএনএফের জীবন রহমান ১৩৮ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে মোট ভোট পড়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ২২৫টি। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মীর মাহমুদুর রহমান (হাতপাখা) ৩ হাজার ১৫৫ ভোট, জাতীয় পার্টির তাজ মোহাম্মদ শেখ (লাঙ্গল) ১ হাজার ২১২ ভোট, সিপিবির সন্তোষ কুমার পাল (কাস্তে) ৪৪৭ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবদুন নূর (আম) ৩৫৩ ভোট, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রঞ্জন কুমার দে (কোদাল) ২৩৬ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফ মণ্ডল (মাথাল) ২০৪ ভোট, ইসলামী ঐক্যজোটের নজরুল ইসলাম (মিনার) ১৯৩ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা জামান হিমিকা (সিংহ) ১৩২ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
বগুড়া-৬ (সদর) মোট ভোট পড়েছে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৯৬৭টি। এর মধ্যে ৭৯ ভোট পেয়ে বিএনএফের জীবন রহমান (টেলিভিশন), ৬৯০ ভোট পেয়ে জাকের পার্টির ফয়সাল বিন শফিক (গোলাপ ফুল), ১ হাজার ৪৬২ ভোট পেয়ে সিপিবির আমিনুল ফরিদ (কাস্তে), ১ হাজার ২৬ ভোট পেয়ে ন্যাপের আমিনুর রহমান (কুঁড়েঘর) এবং ৪ হাজার ৩২৩ ভোট পেয়ে ইসলামী আন্দোলনের আনম মামুনুর রশিদ (হাতপাখা) জামানত হারিয়েছেন।
বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে মোট ভোট পড়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৭৩৬টি । এর মধ্যে ৩১৮ ভোট পেয়ে বাসদের শহিদুল ইসলাম (মই), ১ হাজার ৭৪৩ ভোট পেয়ে এনপিপির ফজলুল হক (আম), ৩ হাজার ৫৭৮ ভোট পেয়ে ন্যাপের মন্তেজার রহমান (কুঁড়েঘর) এবং মহাজোট-সমর্থিত জাতীয় পার্টির বর্তমান সাংসদ মুহাম্মদ আলতাফ আলী (লাঙ্গল) ২৬ হাজার ৫৪ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।