বেইলি সেতুর দৈর্ঘ্য ১৬০ ফুট। মাঝখানে কোনো পিলার নেই। ৩৭ বছর আগে নির্মিত এই সেতুর স্টিলের পাটাতনগুলো হয়ে গেছে জরাজীর্ণ। তাই গাড়ি উঠলেই দুলতে থাকে। দীর্ঘ আট বছর ধরে এই সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এটি আছে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর তালিকায়।
সেতুটি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শালফা গ্রামে। এটি শালফা বেইলি সেতু হিসেবে পরিচিত। শেরপুর-সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের এই সেতু দিয়ে বগুড়ার ধুনট, সারিয়াকান্দি ও সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) বগুড়া কার্যালয় সেতুটি দেখভাল করে।
সওজের বগুড়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮২ সালে শেরপুর-সিরাজগঞ্জ সড়কের উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের শালফা গ্রামে এই সেতু নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের ৩৭ বছরের মধ্যে অন্তত ১৫ বছর ভালোই ছিল। এরপর ভারী যান চলাচলের কারণে সেতুটির পাটাতন ফেটে যেতে শুরু করে। বর্তমানে সেতুটির মাঝখানে দেবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অন্তত মাসে দুবার এই সেতু মেরামত করতে হয়।
গত ২৯ জুন সরেজমিনে দেখা যায়, বেইলি সেতুর প্রস্থ ১২ ফুট। সেতুর ওপরে অন্তত আটটি পাটাতনে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। বাস বা অন্য ভারী যানবাহন উঠলেই সেতু কাঁপতে থাকে।
সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকারী এক বাসচালক বলেন, মাঝখানে পিলার না থাকায় সেতুটি দেবে গেছে। এ কারণে এর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে।
সেতুর পাশের বোয়ালকান্দি গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, সেতুর ওপর দিয়ে ভারী পণ্যবাহী ট্রাক ও ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস নিয়মিত চলাচল করে। এ ছাড়া আঞ্চলিক সড়কের পাশে ধুনট, সারিয়াকান্দিসহ সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার বিভিন্ন হাটের পণ্যবাহী ট্রাকও সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করে।
বগুড়া জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আরিফুর রহমান বলেন, সেতুর ওপর দিয়ে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবোঝাই ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের অন্তত ৭০০ গাড়ি চলাচল করে। এ ছাড়া ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে কোনো যানজট হলে দূরপাল্লার সব বাস এই সড়ক দিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে চলাচল করে। সেতুটি জরাজীর্ণ হওয়ায় দূরপাল্লার বাসগুলো দুর্ঘটনার কবলে পড়লে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে সওজ বগুড়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, শালফা বেইলি সেতুটি অন্তত আট বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর তালিকায় রয়েছে। সেতুটি ভেঙে পড়ে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ পরিস্থিতিতে গত অর্থবছরে ওই সেতুর স্থলে পাকা সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।