রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালের একটি বাড়িতে গ্যাসলাইনের বিস্ফোরণে দেয়ালধসে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণের আগুনে শিশুটির মা, বাবা ও বোন দগ্ধ হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে বংশালের সামসাবাদ লেনে এই ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী, ফায়ার সার্ভিস ও হাসপাতাল সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
মারা যাওয়া শিশুটির নাম ময়নুল। তার বয়স এক বছর।
দগ্ধ হয়েছেন শিশুটির বাবা জাবেদ (৩৫), মা শিউলি (২৫) ও বোন জান্নাত (৪)।
দগ্ধ ব্যক্তিদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
চিকিৎসকেরা বলেন, দগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে শিশু জান্নাত ও তার বাবা জাবেদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জাবেদ ও তাঁর স্ত্রী শিউলি স্কুলব্যাগ তৈরির কাজ করেন। তাঁরা বংশালের ৪৪/১ সামসাবাদ লেনের বাড়ির নিচতলায় থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, সকাল সোয়া ৮টার দিকে বাড়িটির নিচতলার দেয়াল ধসে পড়ার শব্দ পান তাঁরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান, নিচতলার দুটি কক্ষের দেয়াল ধসে পড়েছে। তখন কক্ষ দুটিতে আগুন জ্বলছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা জয়নুল বলেন, এলাকাবাসী আগুন নিভিয়ে জাবেদ, শিউলি ও জান্নাতকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। একই সঙ্গে তাঁরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা লিমা খানম জানান, ধসে পড়া দেয়ালের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির জানানো হয়।
বংশাল থানার ওসি শাহীন ফকির প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই বাসার গ্যাস সরবরাহে সমস্যা ছিল। গতকাল বুধবারও গ্যাসের লাইন মেরামত করা হয়। আগেও একবার ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু আজ সকালে সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্যাসের লাইনে লিকেজ ছিল। সেখান থেকেই হয়তো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।’
ওসি বলেন, বিস্ফোরণে ওই ভবনের নিচতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া একই লাইনে থাকা আশপাশের বাসার গ্যাসের পাইপ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পাশের তিনটি কাগজের গুদাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিশু জান্নাতের শরীরের ৬০ শতাংশ, তার বাবার ৩৭ শতাংশ ও মায়ের ১৭ শতাংশ পুড়ে গেছে।’