আজ রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে মিরপুরে এম এম বি সি মডেল ইনস্টিটিউট ফটকের দিকে হেঁটে আসছিলেন এক ব্যক্তি। প্রধান ফটক থেকে ১০০ গজ দূরে থাকার সময় হঠাৎ ‘ধর ধর’ চিৎকার। সঙ্গে সঙ্গে ওই লোক উল্টো দিকে দৌড় দিলেন। আর তাঁর পেছন পেছন তাড়া করে যাচ্ছিলেন ১০-১৫ জন। এই প্রতিবেদকের সামনেই ঘটল এ ঘটনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মিরপুর-১৬ আসনের ভোট কেন্দ্র ছিল এম এম বি সি মডেল ইনস্টিটিউট।
তাড়া করা ব্যক্তিকে পাশের গলিতে গিয়ে ধরে ফেললেন এসব লোক। ধরেই মারধর, কিল, ঘুষি দেওয়া শুরু করলেন তাঁরা। প্রতিবেদকও ছুটলেন তাঁদের পেছনে। কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে তিনি এ দৃশ্যগুলো ক্যামেরাবন্দী করেন। হঠাৎ মারধর করা লোকজনের নজরে পড়ল বিষয়টি। সঙ্গে সঙ্গে দুই ভাগে ভাগ হয়ে দলটির কয়েকজন মারধর করা ব্যক্তিটিকে টেনে হিঁচড়ে ওয়াসার পাম্প হাউসের পাশে অগ্রণী কল্যাণ সমিতির ভেতরে নিয়ে গেলেন। আর কয়েকজন এগিয়ে এলেন প্রতিবেদকের কাছে। তাদের বুকে মিরপুর-১৬ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ ইলিয়াস মোল্লার ব্যাজ। ওই আসনে বিএনপি প্রার্থী আহসান উল্লাহ হাসান।
এর মধ্যে দলনেতা গোছের একজন প্রতিবেদকের কাছে এগিয়ে এসে ছবি তোলার কারণ জানতে চাইলেন। পরিচয় দেওয়ার পর বললেন, ‘যা হওয়ার হয়েছে, ছবি ডিলিট করেন।’ মুঠোফোন থেকে ছবি মুছতে না চাইলে ফোনটি তিনি কেড়ে নেন এবং ছবিগুলো মুছে দেন। প্রতিবেদক তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে নাম বলেন, ‘আনিস তালুকদার’। ওই লোককে কেন মারধর করা হলো জানতে চাইল বলেন, ‘আমি ওর কাছে টাকা পাইতাম, দিচ্ছিল না। ওকে পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ পেয়ে ধরছি।’
আনিস তালুকদার তাঁর লোকজন নিয়ে চলে যাওয়ার ১০ মিনিট পর প্রতিবেদক আটক ব্যক্তিটি সম্পর্কে জানতে অগ্রণী সমিতিতে যান। সেখানে গিয়ে কক্ষের দরজা বন্ধ দেখতে পান। ওই সময় আনিস তালুকদার নামধারী ব্যক্তি বেরিয়ে আসেন। প্রতিবেদক তাঁর কাছে ঘটনা সম্পর্কে আবারও জানতে চাইলে বলেন, ‘ও ক্রিমিনাল, ওর যন্ত্রণায় বিএনপির সময় এলাকায় থাকতে পারি নাই।’ ঘটনাটি নিয়ে কিছু না লেখার হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, ‘শোনেন, আওয়ামী লীগ না আসলে মেট্রো রেল হবে না। পদ্মা সেতু হবে না।’