ফিটনেস নবায়ন না করা কোনো গাড়িকে সিএনজি গ্যাস স্টেশন বা পেট্রল পাম্প থেকে চলাচলের জন্য জ্বালানি না দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২ মাস বা ফিটনেস নবায়ন না করা পর্যন্ত যেটি আগে হয়, সেই সময় পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
আজ বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ সমস্ত ফিটনেসবিহীন যানগুলো যাতে জ্বালানি না নিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রধানসহ বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতের ইতিপূর্বের নির্দেশ অনুসারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকাসহ সারা দেশে রেজিস্ট্রেশনের পর ফিটনেস নবায়ন না করা ৮৯ হাজার ২৬৯টি গাড়ি গত দুই মাসে ফিটনেস নবায়ন করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে আদালত ওই আদেশ দেন। আদালতে বিআরটিএর পক্সে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী ও মো. রাফিউল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক।
এর আগে গত ২৪ জুন হাইকোর্ট এক আদেশে ঢাকাসহ সারা দেশে রেজিস্ট্রেশনের পর ফিটনেস নবায়ন না করা যান ও লাইসেন্স নিয়ে তা নবায়ন না করা চালকের বিস্তারিত তথ্য এক মাসের মধ্যে দাখিল করতে বিআরটিএকে নির্দেশ দেন। ফিটনেস নবায়ন না করা যান ও লাইসেন্স নবায়ন না করা চালকের ক্ষেত্রে বিআরটিএ কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তাও এ সময়ের মধ্যে জানতে বলে ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ জুলাই বিএরটিএর পক্ষে আইনজীবী মো. রাফিউল ইসলাম প্রতিবেদন দাখিল করেন। বিআরটিএর ওই প্রতিবেদনের ভাষ্য ছিল, ঢাকাসহ সারা দেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ির সংখ্যা ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩২০টি। ওই দিন এক আদেশে ফিটনেস নবায়ন না করা ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩২০টি যানের ফিটনেস নবায়ন করতে গাড়ি মালিকদের দুই মাস সময় বেধে দেন আদালত। সেই সঙ্গে ১ আগস্ট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিআরটিএর কাছে গিয়ে এসব যানের ফিটনেস পরীক্ষা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে বিআরটিএ ও পুলিশের মহাপরিদর্শকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে আদেশের জন্য ২৩ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়।
‘নো ফিসনেস ডকস, ইয়েট রানিং’ শিরোনামে গত ২৩ মার্চ ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এর ভাষ্য, ৭০ হাজারের বেশি যানবাহন ফিটনেস সার্টিফিকেট ১০ বছরেও নবায়ন করেনি, এর অনেকগুলোই দুর্ঘটনার গুরুতর ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় আছে। প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এলে গত ২৭ মার্চ আদালত স্বতঃপ্রণোদিত রুল দেন। একই সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশে ফিটনেসবিহীন ও নিবন্ধনহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সহীন চালকের তথ্যাদি প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।