সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনে ৪২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ১৪ জন প্রার্থীর ‘স্বর্ণালংকার’ রয়েছে। স্ত্রীর না থাকলেও নিজের স্বর্ণালংকার রয়েছে, এমন প্রার্থীও রয়েছেন। আবার স্ত্রীর চেয়ে বেশি এবং স্ত্রীর সমপরিমাণ স্বর্ণালংকার রয়েছে, এমনও প্রার্থী আছেন সিলেটে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে ‘স্বর্ণবিলাস’ এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সিলেট-১ (সদর) আসনের ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে দুজনের স্বর্ণালংকার আছে। বিএনপির প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদীরের নিজের এবং স্ত্রীর ৫০ ভরি করে মোট ১০০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। ইসলামী ঐক্যজোটের (আইওজে) মুহম্মদ ফয়জুল হকের ১ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। আওয়ামী লীগের এ কে আবদুল মোমেনের নিজের স্বর্ণ না থাকলেও তাঁর স্ত্রীর ৫০ লাখ টাকার স্বর্ণ রয়েছে। জাতীয় পার্টির মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর স্ত্রীর ৫ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উজ্জ্বল রায়ের স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। খেলাফত আন্দোলনের নাসির উদ্দিনের স্ত্রীর আছে ৫ ভরি এবং মেয়ের ৩ ভরি স্বর্ণ। বাংলাদেশ মুসলিম লীগের আনোয়ার উদ্দিন বুরহানাবাদীর স্ত্রীর ২ ভরি স্বর্ণ আছে।
সিলেট-২ আসনে (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আটজন প্রার্থীর মধ্যে চারজন প্রার্থীর স্বর্ণালংকার রয়েছে। খেলাফত মজলিসের মুহাম্মদ মুনতাছির আলীর নিজের ২৫ ভরি এবং স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমানের কোনো স্বর্ণালংকার নেই। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক সরদারের ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। অন্যদিকে তাঁর স্ত্রীর রয়েছে ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর ১ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার রয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির উদ্দিনের স্ত্রীর ৪ ভরি স্বর্ণলংকার রয়েছে। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মোশাহিদ খানের স্ত্রীর ২ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। গণফোরামের মোকাব্বির খান এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মনোয়ার হোসাইনের নিজের বা স্ত্রীর কোনো স্বর্ণ নেই।
সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনে ছয়জন প্রার্থীর দুজনের স্বর্ণালংকার রয়েছে। অন্যান্যের মধ্যে একজন ছাড়া বাকিদের স্ত্রীর স্বর্ণালংকার রয়েছে। বর্তমান সাংসদ ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর নিজের ৫০ ভরি স্বর্ণ এবং ছেলের ১ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। তবে তাঁর স্ত্রীর কোনো স্বর্ণ নেই। খেলাফত মজলিসের দিলওয়ার হোসাইনের নিজের ৫ ভরি স্বর্ণ এবং স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে।
বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরীর স্বর্ণালংকারের তথ্য হলফনামায় উল্লেখ নেই। জাতীয় পার্টির উছমান আলীর স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। খেলাফত মজলিসের মাওলানা আতিকুর রহমানের স্ত্রীর ৫ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এম এ মতিন বাদশার স্ত্রীর ১ ভরি স্বর্ণ রয়েছে।
সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে পাঁচজন প্রার্থীর কারোরই নিজের স্বর্ণালংকার নেই। তবে চার প্রার্থীর স্ত্রীর স্বর্ণ রয়েছে। বর্তমান সাংসদ ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইমরান আহমদের স্ত্রীর ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার রয়েছে। বিএনপির দিলদার হোসেন সেলিমের স্ত্রীর ৪০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার রয়েছে। জাতীয় পার্টির আহমেদ তাজ উদ্দিন তাজ রহমানের স্ত্রীর ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মনোজ কুমার সেনের স্ত্রীর ১ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার রয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জিল্লুর রহমানের নিজের কিংবা স্ত্রীর স্বর্ণালংকার নেই।
সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট) আসনে আওয়ামী লীগের হাফিজ আহমদ মজুমদারের সাড়ে তিন হাজার টাকার স্বর্ণালংকার রয়েছে। ইসলামী ঐক্যজোটের (আইওজে) এ এ মতিন চৌধুরীর ১২ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নুরুল আমিনের ৭ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। তবে ২৩-দলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উবায়দুল্লাহ ফারুকের নিজের বা স্ত্রীর কোনো স্বর্ণ নেই।
বর্তমান সাংসদ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম উদ্দিনের স্ত্রীর ৭৫ হাজার টাকার স্বর্ণ রয়েছে। বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মো. শহিদ আহমদ চৌধুরীর স্ত্রীর ৫ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। গণফোরামের মো. বাহার উদ্দিন আল রাজীর স্ত্রীর ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। স্বতন্ত্র ফয়জুল মুনির চৌধুরীর স্ত্রীর আছে ৫ ভরি স্বর্ণালংকার।
সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ) আসনে দুজন প্রার্থীর স্বর্ণালংকার রয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদের ৭৫ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার রয়েছে। তবে তাঁর স্ত্রীর স্বর্ণালংকারের মূল্য তাঁর জানা নেই বলে উল্লেখ করেছেন।
বিএনপির ফয়সল আহমদ চৌধুরীর নিজের ৩০ ভরি এবং স্ত্রীর ৮০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। এর অর্জনকালীন মূল্য তিনি দেখিয়েছেন ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। বিকল্পধারা বাংলাদেশের শমসের এম চৌধুরীর স্ত্রীর ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার রয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আজমল হোসেনের স্ত্রীর ১ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়ার ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। তবে তাঁর স্ত্রীর কোনো স্বর্ণ নেই। এ ছাড়া নিজের স্বর্ণালংকারের দাম তিনি জানেন না।