জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন এবং নির্বাচন থেকে তিনি পালিয়ে যেতে চান। ঐক্যফ্রন্টের প্রথম রোডমার্চ থেকে এসব কথা বলেন নেতারা।
আজ শনিবার ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা রোডমার্চ করেন। রোডমার্চের অংশ হিসেবে দুপুরে তাঁদের প্রথম পথসভাটি হয় টঙ্গীর ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সালাউদ্দিন সরকারের বাড়ি প্রাঙ্গণে। যদিও এ সভাটি হওয়ার কথা ছিল শফিউদ্দিন সরকার একাডেমি মাঠে। কিন্তু এ মাঠের লাগোয়া টঙ্গী সরকারি কলেজে আওয়ামী লীগেরও একটি কর্মসূচি থাকায় ঐক্যফ্রন্টের সভা একাডেমি মাঠে হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিও হয়নি।
জেএসডির সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন। নির্বাচন বন্ধ করার সুযোগ খুঁজছেন। তিনি নির্বাচন থেকে পালিয়ে যেতে চান।’ ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রীকে নিরাপত্তা দেওয়ার নিশ্চয়তা দেন তিনি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী বিদেশে যেতে চাইলেও দেওয়া হবে বলে জানান। রব বলেন, বিরোধী দলকে নিয়েই তাঁরা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন।
নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা প্রটোকল নিয়ে চলছে অভিযোগ করে রব বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য তাঁদের প্রটোকল দিতে হবে। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের মামলা-হামলা বন্ধ করার আলটিমেটাম দিয়ে বলেন, এসব বন্ধ না হলে জনগণ রুখে দাঁড়াবে। তখন সবকিছুর দায় প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে।
ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যুদ্ধে নেমেছি। ওদের কাছে অস্ত্র আছে, আমাদের নেই। আমাদের আছে ব্যালট। এ লড়াইয়ে আমরাই জিতব।’ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘরে ঘুমানোর দরকার নেই। মার খেলেও জবাব না দেওয়ার জন্য বলেন। সব জবাব ৩০ ডিসেম্বর দেওয়া হবে উল্লেখ করে বলেন, ‘এমন জবাব দেব যে আওয়াজও করতে পারবে না।’
এ পর্যন্ত বিএনপির ৮ জন প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, অপকর্মের জবাব দেওয়ার ভয়ে সরকার ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে দেশের অস্তিত্বের, দুঃশাসন হটানোর ও খালেদা জিয়ার মুক্তির নির্বাচন বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জেতার কোনো বিকল্প নেই। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে থাকার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পাঁচ দিনেই প্রধানমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন বলে জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনের মতো এত সহিংসতা আগে কখনো ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় হামলার জন্য লোক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি আগামীকালের মধ্যে সেনাবাহিনী নামানোর আহ্বান জানান। বলেন, আগামী ২ জানুয়ারি ন্যায়বিচারের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে।
ঐক্যফ্রন্টের এ রোডমার্চে জোটের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের উপস্থিত থাকার কথা জানানো হলেও তিনি রোডমার্চে অংশ নেননি। এরপর গাজীপুর চৌরাস্তা, ময়মনসিংহের ভালুকা, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ, ফুলপুর ও শেরপুরে বেশ কয়েকটি পথসভা হওয়ার কথা রয়েছে।
টঙ্গীর পথসভায় গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি হাসানউদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, এ জেড এম জাহিদ হাসান, স্থানীয় প্রার্থী সালাউদ্দিন সরকার প্রমুখ।