ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় অবহেলার অভিযোগে করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এরপর মতিউর রহমানকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। জামিনের আবেদন করলে তা বিচারিক আদালতকে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে ‘কিশোর আলো’ সম্পাদক আনিসুল হকসহ অপর পাঁচজনকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। মামলার অভিযোগ গঠন বা অন্য কোনো প্রতিবেদন দাখিল না করা পর্যন্ত তাঁদের হয়রানি বা গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ছয়জনের আগাম জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এই নির্দেশ দেন। ছয়জনের আগাম জামিনের আবেদন নিষ্পত্তি করে এই আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ছয়জনের পক্ষে জামিনের শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সুমাইয়া আজিজ, আফতাফ উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রশান্ত কর্মকার ও তানজিম আল ইসলাম।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
জামিন শুনানির সময় আজ আদালতে হাজির ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ছয়জন।
ওই মামলায় ১৬ জানুয়ারি ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রথম আলো সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ এ মামলায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরপরই বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১০ জনের নামে পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়া হয়।
গতকাল রোববার হাইকোর্টে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আরজি জানান প্রথম আলো সম্পাদকসহ ছয়জন। অপর পাঁচজন হলেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও ‘কিশোর আলো’ সম্পাদক আনিসুল হক, জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামানিক। এ ছাড়া ‘কিশোর আলো’র অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জসীম উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হাওলাদার জামিনের আবেদন করেননি।
হাইকোর্ট গতকাল প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ছয়জনের জামিন আবেদনের ওপর আজ (সোমবার) শুনানির জন্য দিন রেখেছিলেন। শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের হয়রানি ও গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আজ শুনানি নিয়ে আদেশ দেন আদালত।
গত ৬ নভেম্বর নাইমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান বাদী হয়ে ঢাকার আদালতে মামলাটি করেন। আদালত সেদিন নালিশি মামলাটি আমলে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। মামলায় মজিবুর রহমান অভিযোগ করেছেন, ১ নভেম্বর তাঁর ছেলে নাইমুল আবরার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে কিশোরদের ম্যাগাজিন ‘কিশোর আলো’র বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়।
আরও পড়ুন:
প্রথম আলো সম্পাদক ও কর্মীদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় প্রতিক্রিয়া
মামলা যেন মতপ্রকাশ খর্ব করার অপচেষ্টা না হয়
বাংলাদেশে চাপের মুখে গণমাধ্যম
‘যেন প্রথম আলোকে দেখে নেবার মতো বিষয় না হয়’
মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় উদ্বেগ
মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় উদ্বেগ