পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী শুক্রবার। এবারের পরীক্ষায় অংশ নেবেন ২৫ হাজারের মতো পরীক্ষার্থী। এই বিপুলসংখ্যক পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের সঙ্গে আসা অভিভাবকদের দুর্ভোগ লাঘবে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে পাবনা জেলা প্রশাসন।
গতকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাবিপ্রবির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেন, ‘১৫ নভেম্বরের ভর্তি পরীক্ষাটি পাবনাবাসীর জন্য উৎসবের মতো। পাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকেরা আমাদের অতিথি। তাঁদের থাকা–খাওয়ার দায়িত্ব আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা আগত শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
সভায় বক্তারা বলেন, ১৫ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা হলেও মূলত তার আগের দিন থেকেই ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা আসতে শুরু করবেন। তাঁদের সেবা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠনের কয়েক শ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন। শহরের স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে রাখা হবে শিক্ষার্থীদের। এসব ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবককে যাতায়াত, খাওয়াদাওয়া, প্রাথমিক চিকিৎসাসহ সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ একযোগে কাজ করবে।
এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষা দিতে আগত শিক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের ভোগান্তি নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন জানান, পরীক্ষায় অংশগ্রহণবারীরা বৃস্পতিবার সকাল থেকে শহরে আসতে শুরু করবেন। শহরের ৪১ টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান কর্তৃক স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে ভর্তি পরীক্ষার সময় শহরের আবাসিক হোটেলের ভাড়া না বাড়ানো, বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবারের দাম সাধ্যের মধ্যে রাখা, রিকশা-সিএনজিচালি অটোরিকশাওয়ালাদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় থেকে বিরত রাখাসহ আগত শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রীতম কুমার দাস স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষাকেন্দ্রের শৃঙ্খলাভঙ্গসহ জালিয়াত চক্র বা প্রতারক চক্রের কোনো কর্মকাণ্ড অথবা যেকোনো অনিয়মের সন্ধান পেলে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থিত প্রক্টর অফিস এবং পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ রুস্তম আলী, সহ–উপাচার্য আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ, পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসসহ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, ছাত্র প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।
*দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষার্থী, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়