বৃষ্টি হলে কাদাপানিতে একাকার সড়কে হাঁটাও দায় হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। আবার রোদের সময় ধুলার অত্যাচার সইতে হয়। এভাবে দিনের পর দিন চললেও কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।
আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলেন কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের সুন্দরীপাড়ার বাসিন্দা মনসুর আলম। প্রতিদিন ইউনিয়নের দরবার সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন তিনি। সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। শুধু মনসুর নয়, এই আক্ষেপ পাঁচ গ্রামের মানুষের। এক যুগের বেশি সময় ধরে ভাঙা সড়ক দিয়ে চলাচল করছে তারা।
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাজাখালী ইউনিয়নের বকশিয়াঘোনা, সুন্দরীপাড়া, বদিউদ্দিনপাড়া, ছঁরিপাড়া ও নতুনপাড়া এলাকার ১৫ হাজার বাসিন্দা সড়কটি দিয়ে চলাচল করে। তিন কিলোমিটারের সড়কটিতে ২০০৩ সালে ইট বিছানো হয়। বড় ট্রাকে করে লবণ ও চিংড়ি পরিবহন করতে গিয়ে চার বছরের ভেতর ভেঙে যায় সড়কটি। এরপর এলাকাবাসী ও স্থানীয় শিক্ষার্থীরা কয়েকবার ইটের খোয়া দিয়ে সড়কটি মেরামত করলেও তা স্থায়ী হয়নি। এখন ভাঙা সড়কে কষ্টে চলাচল করছে মানুষ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছাড়া সড়কটি দিয়ে কোনো ধরনের যানবাহন চলে না। বেশির ভাগ সময় মানুষ হেঁটেই ঘরবাড়িতে ও বাজারে যাওয়া-আসা করছে। সড়কের সব ইট উঠে গেছে। সড়কের কিছু অংশ বৃষ্টি হলেই ডুবে যায়।
সুন্দরীপাড়ার বাসিন্দা ও রাজাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনছারুল ইসলাম বলেন, কয়েকটি অটোরিকশা চললেও ভাড়া নেওয়া হয় দ্বিগুণ। কারণ সড়কটি দিয়ে অন্য অটোরিকশাগুলো যেতে চায় না। যাঁরা অটোরিকশা চালান, তাঁরাও গাড়ি ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। লবণ ও চিংড়ি পরিবহনে সমস্যায় পড়ছেন স্থানীয়রা।
রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূর বলেন, ‘দরবার সড়কটি এখন স্থানীয়দের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) কার্যালয়ে অনেকবার লিখিত আবেদন করেছি। কিন্তু সড়কটি সংস্কারে কোনো প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে না।’
এলজিইডির পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী বলেন, দরবার সড়ক সংস্কারের জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। শিগগির বরাদ্দ আসতে পারে। বরাদ্দ পেলে দরবার সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হবে।