ঢাকা মহানগরের ১৫টি আসনের মধ্যে ৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৮টি দলের সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থীরা। পরিবর্তনের ডাক দিয়ে প্রতিদিনই তাঁরা নগরের বিভিন্ন এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। প্রার্থীরা জানিয়েছেন, ভোটারদের কাছ থেকেও তাঁরা ভালো সাড়া পাচ্ছেন। তবে শেষ পর্যন্ত নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে তাঁরা শঙ্কিত।
ঢাকা জেলার ২০টি আসনের মধ্যে ৪ থেকে ১৮ নম্বর আসন পড়েছে ঢাকা মহানগরের মধ্যে। আসনগুলোতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) চারজন প্রার্থী আবু তাহের হোসেন (ঢাকা-৬), খান আহসান হাবীব (ঢাকা-১৩), রিয়াজ উদ্দিন (ঢাকা-১৪), আহাম্মদ সাজেদুল হক (ঢাকা-১৫) কাস্তে প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) তিন প্রার্থী খালেকুজ্জামান (ঢাকা-৭), শম্পা বসু (ঢাকা-৮), এস এম আহসান হাবিব (ঢাকা-১৭) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মই প্রতীক নিয়ে। আর বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির হয়ে জোনায়েদ সাকি (ঢাকা-১২) ও নাঈমা খালেদ মনিকা (ঢাকা-১৬) কোদাল প্রতীকে নর্বাচন করছেন।
ঢাকা-৪, ৫, ৯, ১০, ১১, ১৮ নম্বর আসনগুলোতে বাম জোটের কোনো প্রার্থী নেই। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রার্থীদের পাশাপাশি জোটের শীর্ষ নেতারাও নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। তাঁরা ভোটারদের আকৃষ্ট করতে, ভিশন-মুক্তিযুদ্ধ ৭১ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ১৯৭২-এর সংবিধানের মূলভিত্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা, গ্রাম অভিমুখী গরিববান্ধব কার্যক্রম পরিচালনা, লুটের টাকা উদ্ধার করে পুনর্বণ্টন, গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণের ভিত্তিতে রাষ্ট্রক্ষমতাকে ঢেলে সাজানোসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রার্থীরা তাঁদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় পথসভা, গণসংযোগসহ বিভিন্ন নির্বাচনী কার্যক্রম চালান। ঢাকা-৭ আসনে খালেকুজ্জামান ওরফে লিপনের সঙ্গে গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রুহিন হোসেনসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা।
ঢাকা-১৫ আসনে কাস্তে প্রতীকের প্রার্থী আহাম্মদ সাজেদুল হক সেনপাড়া, ১৪ নম্বর, ইব্রাহিমপুরসহ আশপাশের এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় বিভিন্ন স্থানে পথসভায় বক্তব্য দেন সিপিবির ঢাকা কমিটির সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান, সাবেক ছাত্রনেতা সুলতানা ফেরদৌসি, আলী কাউসার প্রমুখ।
ঢাকা-১৪ আসনের প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে দুয়ারিপাড়া, মিরপুর-১, গুদারাঘাট, শাহ আলী এলাকায় গণসংযোগ করা হয়। এ সময় বিভিন্ন স্থানে পথসভা করেন। বক্তব্য দেন অভিনয়শিল্পী যুবনেতা সুমনা সোমা, আইনজীবী মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা-১৩ আসনে খান আহসান হাবীব গতকাল আদাবর ও শ্যামলী এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় পথসভায় বক্তব্য দেন সিপিবি নেতা জামাল হায়দার, কৃষক নেতা নিমাই গাঙ্গুলী, সিপিবি নেতা মোশারফ হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা-১৬ আসনে সকাল থেকে গণসংযোগে নামেন জোটের প্রার্থী নাঈমা খালেদ। মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনের বিভিন্ন স্থানে তিনি গণসংযোগ করে কোদল প্রতীকে ভোট চান।
ঢাকা-৬ আসনে আবু তাহের হোসেন কালিচরণ সাহা রোড, মিলব্যারাক, কে বি রোড, ঢালকানগর, সতীশ সরকার রোড, মালাকারটোলা এলাকায় গণসংযোগ করে কাস্তে প্রতীকে ভোট চান। এ সময় তাঁর সমর্থনে কয়েকটি স্থানে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী এস এম আহসান হাবিব মহাখালী ওয়্যারলেস গেট এলাকা থেকে কড়াইল বস্তি, কড়াইল টিঅ্যান্ডটি কলোনি এলাকায় মই প্রতীকে ভোট চেয়ে জনসংযোগ করেছেন।
ঢাকা-১২ আসনে মগবাজার, মধুবাগ, পেয়ারাবাগ ও মীরেরবাগ এলাকায় কোদাল প্রতীকের প্রার্থী জোনায়েদ সাকি গণসংযোগ করেন।
ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী শম্পা বসু ক্ষমতার পরিবর্তন নিয়ে আশাবাদী। গতকাল তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মতিঝিল, গোপীবাগ এলাকায় জনসংযোগ করে মই মার্কায় ভোট চান।