পবিত্র হজ পালনে যেতে আগ্রহীদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ

চলতি বছর ১০ লাখ হজযাত্রীকে পবিত্র হজ পালন করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব
 ফাইল ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের সব দেশে করোনা মহামারি পরিস্থিতি এখনো সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়ায় এ বছর বিশেষ পরিস্থিতিতে ও স্বল্প সময়ের প্রস্তুতিতে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় আসন্ন হজে গমন–ইচ্ছুক ও হজ-সংশ্লিষ্টদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় কিছু পরামর্শ দিয়েছে।

আজ শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুষ্ঠুভাবে হজ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হজে গমন–ইচ্ছুক ব্যক্তি ও হজ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সবার অবগতি ও প্রস্তুতি গ্রহণের কিছু বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

বিষয়গুলো হচ্ছে ২০২২ সালের হজে ৬৫ বছরের (পাসপোর্ট অনুযায়ী যাঁদের জন্মতারিখ ১ জুলাই ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দ ও পরবর্তী) কম বয়সী ব্যক্তিই শুধু হজ পালনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। ১৪৪১ হিজরি বা ২০২০ সালে সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত হজযাত্রী ১৪৪৩ হিজরি সনে হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া ২০২০ সালে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে (পাসপোর্ট অনুযায়ী যাঁদের জন্মতারিখ ৩০ জুন ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দ বা পূর্বে) নিবন্ধিত বয়স্ক হজযাত্রী অথবা ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেউ হজে যেতে আগ্রহী হলে তিনি ওই শূন্য কোটায় অগ্রাধিকার পাবেন। সরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ঢাকার হজ অফিসের পরিচালকের কাছে অবিলম্বে বদলি হজযাত্রী পাসপোর্টসহ আবেদন করবেন। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আগ্রহী ব্যক্তিরা যোগ্য নিজ নিজ হজ এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। উভয় ক্ষেত্রেই প্রস্তাবিত ব্যক্তির প্রাক্‌-নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, স্বল্প সময়ের মধ্যে ২০২২ সালের হজের জন্য নতুনভাবে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করে ভিসার আবেদন করার লক্ষ্যে যেসব বিষয়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে, সেগুলো হলো ২০২০ সালের নিবন্ধিত সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীরা ২০২২ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণার তিন কার্যদিবসের মধ্যে যেকোনো নিবন্ধনকেন্দ্র থেকে প্যাকেজ স্থানান্তর সম্পন্ন করবেন। এ জন্য ২০২০ সালে পরিশোধিত প্যাকেজ মূল্য সমন্বয় করে ২০২২ সালের যেকোনো একটি প্যাকেজের অবশিষ্ট অর্থ ভাউচারের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকে জমা করতে হবে। প্যাকেজ স্থানান্তর বা নিবন্ধনের তিন দিনের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের নিজ নিজ পাসপোর্ট নিজ দায়িত্বে বিনা ব্যর্থতায় হজ অফিস ঢাকায় জমা দিতে হবে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ২০২০ সালের নিবন্ধিত হজযাত্রীরা নিজ নিজ এজেন্সি ঘোষিত প্যাকেজ (সরকারি ব্যবস্থাপনার সর্বনিম্ন প্যাকেজের নিম্নে নয়) দ্রুত নির্ধারণ ও অবশিষ্ট অর্থ পরিশোধ করে এজেন্সির সহায়তায় হজে গমনের কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।

এ ছাড়া নিবন্ধন নিশ্চিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজে গমন–ইচ্ছুক ব্যক্তিরা পাসপোর্টের মেয়াদ যাচাই করে কমপক্ষে ৪ জানুয়ারি ২০২৩ সাল পর্যন্ত মেয়াদযুক্ত পাসপোর্ট প্রস্তুত রাখবেন। যাঁদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বা নতুন করে পাসপোর্ট করতে হবে, তাঁরা অতি জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট করবেন।

হজের সময় সৌদি কর্তৃপক্ষের নিয়ম মোতাবেক প্রতিটি স্থানে গ্রুপভিত্তিক চলাচল করতে হবে এবং হজ সফরের প্রতিটি ক্ষেত্রে সৌদি সরকারের প্রবর্তিত নিয়ম অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কোভিডের টিকা ও টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ করে টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেট হজের পুরো সফরে ব্যবহারের লক্ষ্যে একাধিক কপি বা আইডি কার্ড আকারে লেমিনেট কপি প্রস্তুত রাখবেন। নিবন্ধন ছাড়া কোভিডের টিকা নিয়ে থাকলে অথবা ‘সুরক্ষা’ অ্যাপে টিকা নেওয়ার তথ্য আপডেট নেই, এমন হজযাত্রীকে টিকা গ্রহণের তথ্য সুরক্ষা অ্যাপে অন্তর্ভুক্তিক্রমে টিকার সনদ গ্রহণ করতে হবে, অর্থাৎ টিকা গ্রহণ করলেই চলবে না, টিকা গ্রহণের সনদ অবশ্যই সঙ্গে নিতে হবে। হজে গমনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে নিতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হজযাত্রীরা নিয়মিত সেবন করেন, এমন কোনো ওষুধ সৌদি আরবে নেওয়ার প্রয়োজন থাকলে তা অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের বা হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র সঙ্গে করে লাগেজে বহন করবেন। কোনো ধরনের ব্যবস্থাপত্রবিহীন ওষুধ সঙ্গে নেওয়া যাবে না। হজযাত্রী, গাইড বা সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি জর্দা, গুলসহ নেশাজাতীয় দ্রব্য সঙ্গে নিতে পারবেন না।

সৌদি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, সৌদি আরব থেকে প্রত্যাগমনের সময় ৬০ হাজার সৌদি রিয়ালের বেশি নগদ অর্থ বা সমমূল্যের স্বর্ণালংকার বা মূল্যবান কোনো দ্রব্যাদি বহন করলে ওই যাত্রীকে সৌদি স্থানীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে এবং মূল্যবান দ্রব্যাদি ক্রয়ের ইলেকট্রনিক ভাউচার প্রদর্শন করতে হবে।

হজের বিষয়ে কোনো তথ্য জানার জন্য ঢাকার হজ অফিসের কলসেন্টারের ০৯৬০২৬৬৬৭০৭ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া হজের বিষয়ে কোনো তথ্য জানার প্রয়োজন হলে হজ অনুবিভাগের ফোকাল পয়েন্ট উপসচিব (হজ-১) আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন, মুঠোফোন নম্বর: ০১৭২০২০৯৫৯৯, ই-মেইল: akm.shaheen@gmail.com–এ যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।