মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর সঙ্গে রেলপথের সংযোগ ঘটানোর জন্য ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ) স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আজ মঙ্গলবার সর্বশেষ গার্ডার বসানো হয়েছে। জাজিরা প্রান্তেও একইভাবে সংযোগ ঘটানোর কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
আজ সকালে মাওয়ায় রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম এবং রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরে তাঁরা জাজিরা প্রান্তেও রেলসংযোগের কাজ পরিদর্শন করেন। এ সময় রেলমন্ত্রী বলেন, আগামী বছর যখন পদ্মা সেতু চালু হবে, একই দিনে এর ওপর দিয়ে মাওয়া থেকে ফরিদপুরের ভাঙা পর্যন্ত ট্রেন চলবে। তিনি জানান, চলমান লকডাউনের মধ্যেও প্রকল্পের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কার্যক্রম চলমান আছে। মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। এপ্রিলে মাওয়া থেকে ভাঙা অংশের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৬৬ শতাংশ।
রেলপথমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মাওয়া, ভাঙ্গা, শিবচর ও জাজিরায় স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে। এর মধ্যে ভাঙ্গা জংশন স্টেশন হবে এবং রেললাইনের মাধ্যমে চারটি গন্তব্য সংযুক্ত করা হবে। বিদ্যমান পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন এনে আমরা একে একটি আইকনিক স্টেশনে পরিণত করব।’ তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি সত্ত্বেও কাজের গতি নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট।
পদ্মা সেতু দ্বিতলবিশিষ্ট। এর ভেতর দিয়ে যাবে ট্রেন। ওপরে চলবে যানবাহন। পদ্মা সেতু প্রকল্পের অধীনে যান চলাচল ও ট্রেনের লাইন নির্মাণ হচ্ছে। আর দুই পারের সঙ্গে রেলসংযোগ করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। ঢাকা থেকে কেরানীগঞ্জ ও পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্প। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৪১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গা থেকে মাওয়া অংশ আগে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে দুই দফা ব্যয় বেড়েছে। বাড়তি ব্যয়ের অভিযোগ প্রকল্পের শুরু থেকেই। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে চীনের সঙ্গে জিটুজি ভিত্তিতে। ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে চীনের চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি)। ২০১৬ সালে চুক্তি হলেও কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের দিকে। এ জন্য পদ্মা সেতু দিয়ে একই দিনে যানবাহন ও ট্রেন চলাচল শুরুর বিষয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। ২০২৪ সালে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। পুনরায় ব্যয়ও বাড়তে পারে। কারণ, কদিন পরপরই প্রকল্পের নানা অঙ্গ যুক্ত হচ্ছে, পরিবর্তন করতে হচ্ছে নকশায়।
প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনকালে রেলপথমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রেলের মহাপরিচালক ডি এন মজুমদার, প্রকল্প পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দীন এ চৌধুরী প্রমুখ।