পদ্মা সেতুতে ঘুরতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোঘণা করেন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন মো. আলমগীর হোসেন (২৫) ও মো. ফজলু (২৫)। তাঁরা ঢাকার দোহার–নবাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। নিহত আলমগীর মোটরসাইকেল মেরামতের কাজ করেন। আর ফজলু বিদেশে থাকেন। এক মাস আগে দেশে আসেন তিনি।
আলমগীর ও ফজলুকে যাঁরা ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের একজন জয়দেব রায়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা ছয় বন্ধু মিলে তিনটি মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু দেখতে গিয়েছিলেন। সেতুর জাজিরা প্রান্ত ঘুরে ফেরার সময় মাওয়া প্রান্তে এসে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
জয়দেব বলেন, তিনি যে মোটরসাইকেলে ছিলেন, সেটি সামনে ছিল। তিনি সেতু থেকে নামার পর ফোনে দুই বন্ধুর দুর্ঘটনার শিকারের কথা জানতে পারেন। পরে তাঁদের আর মোটরসাইকেল নিয়ে সেতুর দিকে যেতে দেওয়া হয়নি। তাঁরা হেঁটে কিছু দূর এগোলে দেখেন, আহত দুই বন্ধুকে একটি পিকআপে তুলে নিয়ে আসা হচ্ছে। পরে ওই পিকআপে করেই তাঁরা ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। আজ রোববার ভোর থেকে সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। সকালে যখন পদ্মা সেতুর দুই প্রান্ত থেকে যানবাহন ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন টোল দিয়ে হুড়োহুড়ি করে সেতুতে উঠে পড়েন মোটরসাইকেল আরোহীরা। সারা দিনই মোটরসাইকেলে সেতু পার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। বিকেলে সেতুর জাজিরা প্রান্তে কয়েক হাজার মোটরসাইকেল দেখা যায়।
মোটরসাইকেল আরোহীরা টোল প্লাজার ছয়টি বুথের সামনে ঢুকে পড়েন। এতে অন্যান্য যানবাহন সেতুতে উঠতে সমস্যা হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত পাঁচটি বুথ দিয়ে মোটরসাইকেল ও একটি বুথ দিয়ে অন্যান্য যানবাহন সেতুতে ওঠে। এতে টোল প্লাজার সামনে থেকে সংযোগ সড়কে অন্তত দুই কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়।
রাতে সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করার কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত আগামীকাল সোমবার সকাল ছয়টা থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে।