জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় আজ বৃহস্পতিবার অংশ নেন গাজীপুর–৩ (শ্রীপুর) আসন থেকে নির্বাচিত সরকারদলীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন।
এই সাংসদ বলেন, গত ১০ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসানোর দিন পদ্মাপাড়ে যান তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে পদ্মা সেতুর একটি কথোপকথনের কথা তুলে ধরেন।
ইকবাল হোসেন বলেন, ‘পদ্মা নদীর বুকে দাঁড়িয়ে পদ্মা সেতুকে দুই দিকে দেখার চেষ্টা করলাম। আমি দেখতে পেলাম না। কিন্তু অন্তর্দৃষ্টিতে যখন পদ্মা সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুকে দেখতে পেলাম, তখন আমি মনের অজান্তে পদ্মা সেতুকে কয়েকটি প্রশ্ন করছিলাম।’
‘আমি প্রশ্ন করেছিলাম, সেতু! তুমি কি ইট পাথর কংক্রিট আর স্টিলের স্ট্রাকচারমাত্র? সেতু উত্তর দিল “না”।’
‘আমি সেতুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, সেতু! তুমি কি শুধু দক্ষিণ বাংলার ২১টি জেলার সাথে রাজধানীসহ সারা দেশের যোগাযোগের মাধ্যম শুধু? পদ্মা সেতু বলল, “না”।’
‘আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, পদ্মা সেতু! তুমি কি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির বাহকমাত্র? পদ্মা সেতু উত্তর দিল “না”।’
‘তখন আমি অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে বললাম, আমরা অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক বিভিন্ন লেখকের মাধ্যমে এইটুকুই জেনেছি। আর ভেতরে অন্য কিছু আছে কি? পদ্মা সেতু উত্তর দিল—আছে। পদ্মা সেতু উত্তর দিল—আমি হলাম বাংলাদেশ যে ঘুরে দাঁড়াতে পারে তার মূর্ত প্রতীক। আরও উত্তর দিল, আমি হলাম বাংলাদেশ যে প্রতিবাদ করে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিল, সে মিথ্যা অপবাদ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমি বিজয়ের স্তম্ভ। আমি হলাম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তাদের চপেটাঘাত করে দাঁড়িয়ে থাকা একজন বিজয়ের প্রতীক।’
সাংসদ বলেন, ‘আমি বিস্ময় হলাম! আমি পদ্মা সেতুকে জিজ্ঞাসা করলাম, তোমার এই আত্মমর্যাদাবোধ, এই চেতনাবোধ, সম্মান, উৎসটা কী? বিশ্বাস করুন আমার কাছে মনে হলো পদ্মা সেতুর প্রতিটি বালুকণা, প্রতিটি সিমেন্ট সমস্বরে এত উচ্চস্বরে উত্তর দিল তখন আমার কাছে মনে হলো, পদ্মা সেতুর ঢেউয়ের গর্জন পিনপতন নীরবতার মধ্যে তখন সমস্বরে পদ্মা সেতুর প্রতিটি ধুলাবালু কণা এক সুরে উত্তর দিল আমার প্রেরণার উৎস শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনা এবং শেখ হাসিনা।’
সাংসদ ইকবাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে পদ্মা সেতুর নামকরণের দাবি জানান।