মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় নিখোঁজ আরও দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার সকালে পদ্মা নদীর চর থেকে দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল তিনজনে।
উদ্ধার হওয়া শিশুর নাম আমির হামজা (৬)। সে শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামের ইমরান ফরাজির ছেলে। অন্যজন হলেন মো. মিরাজ হোসেন (২০)। তিনি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠি এলাকার রহমান খন্দকারের ছেলে এবং তিনি কবি নজরুল কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে কাঁঠালবাড়ি ঘাট এলাকায় একটি ট্রলারের সঙ্গে স্পিডবোটের ধাক্কা লেগে সেটি উল্টে যায়। এ সময় নিহত মুরাদ শেখ (২৫) নামের এক শ্রমিক নিহত হন। নিখোঁজ থাকে দুজন। পরে শুক্রবার সকাল থেকে নিখোঁজ দুজনের উদ্ধারে কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএ ডুবুরি দল ও ফায়ার সার্ভিস। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। পরে শনিবার সকাল ১০টার দিকে পদ্মার চরে ভেসে ওঠে নিখোঁজ ৬ বছরের শিশু আমির হামজার লাশ। এর কিছুক্ষণ পরই আরেকটি চরে ভেসে ওঠে কলেজছাত্র মিরাজ হোসেনের লাশ।
মিরাজের মামা মাঈনুদ্দিন সরদার বলেন, ‘স্পিডবোট দুর্ঘটার পরই আমরা কাঁঠালবাড়ি ঘাট এলাকায় অবস্থান করছি। আমার ভাগনে মিরাজ ঢাকায় পড়ালেখা করে। ছুটি পেয়ে বাড়িতে ফিরছিল। কিন্তু ফেরার পথে সে স্পিডবোট দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিখোঁজ হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এর আগের বছর মিরাজের বড় ভাই বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যায়, আমার বোনের দুটি মাত্র ছেলে, এক বছরের মধ্যে দুই ছেলেকে হারিয়ে আমার বোন এখন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা পরিবারে। মিরাজই ছিল পরিবারের একমাত্র সম্বল।’
শিবচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘স্পিডবোট দুর্ঘটনায় এ নিয়ে এক শিশুসহ তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, এ ঘটনায় আর কেউ নিখোঁজ নেই। যদি আমাদের কাছে কেউ নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান চেয়ে আসে, তবে আমরা প্রশাসনের পক্ষে অভিযান চালাব।’
শিবচর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. মর্তুজা ফকির বলেন, ‘শুক্রবার নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে বিআইডব্লিউটিএর ডুবুরি দল ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার কাছে অংশ নেন। আমরা পদ্মার বিভিন্ন অংশে অভিযান চালাই। পরে আজ শনিবার সকালে পদ্মার দুটি চরে দুজনের মৃতদেহ ভেসে ওঠে। আমরা সেই লাশ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।’