৬০ কোটি লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে সক্ষম পদ্মা (জশলদিয়া) ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (পর্যায়-১) এবং সাভার উপজেলায় তেতুলঝোড়া-ভাকুর্তা ওয়েল কনস্ট্রাকশন প্রজেক্ট (পর্যায়-১) উদ্বোধন করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটি লিটার পানি শোধনে সক্ষম নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অপর একটি প্রকল্প গান্ধাপুর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ঢাকা নগরবাসীর ক্রমবর্ধমান খাওয়ার পানির চাহিদা মেটাতে এসব প্ল্যান্ট নির্মিত হচ্ছে। প্ল্যান্টে পদ্মা নদীর পানি শোধন করে পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো হবে।
মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় স্থাপিত পদ্মা (জশলদিয়া) ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ৪৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করবে এবং সাভার উপজেলায় স্থাপিত তেতুলঝোড়া-ভাকুর্তা ওয়েল ফিল্ড প্ল্যান্ট (পর্যায়-১) ১৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করবে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গান্ধাপুর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ সম্পন্ন হলে ৫০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ পাওয়া যাবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার জেলা ও উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত নিরাপদ খাওয়ার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জেলা ও উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের মানুষের কাছে নিরাপদ খাওয়ার পানি পৌঁছে দেওয়া।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানে কেবল ঢাকা নয়, বিভাগীয় শহরগুলোতেও নিরাপদ খাওয়ার পানি সরবরাহ করছি।’ প্রধানমন্ত্রী পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
পদ্মা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অন্যান্য এলাকার চেয়ে পানি সরবরাহ-সংকট তীব্র হয়ে ওঠে। ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে কাছাকাছি সাভার থেকে প্রতিদিন ১৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহের জন্য ঢাকা ওয়াসা ৫৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তেতুলঝোড়া-ভাকুর্তা ওয়েল ফিল্ড-প্ল্যান্ট বাস্তবায়ন করছে।
সাভারে তেতুলঝোড়া-ভাকুর্তা ‘ওয়েল ফিল্ড কনস্ট্রাকশন প্রকল্পে (পর্যায়-১)’ ৪৬টি উৎপাদন কূপ এবং ৪৮ কিলোমিটার সরবরাহ লাইনের মাধ্যমে মিরপুরে পানি সরবরাহ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার প্ল্যান্ট প্রকল্পের অধীনে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গান্ধাপুর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ প্রকল্পে প্রায় ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এখানে মেঘনা নদী থেকে দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পানি শোধন করা হবে।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ফ্রেন্স ডেভলপমেন্ট এজেন্সি (এএফডি), ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
পানির ২২ শতাংশের উৎস ভূ-উপরিস্থিত এবং ৭৮ শতাংশ ভূগর্ভস্থ। দ্রুত বিকাশমান ঢাকা নগরীতে ভূগর্ভস্থ পানির সরবরাহ দ্রুত কমে আসছে, যা নগরীর ১১ মিলিয়ন অধিবাসীর পানির প্রধান উৎস।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, ঢাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হু কাং-ইল, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ এবং ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।