পদ্ম সেতুতে আর মাত্র একটি স্প্যান বসানো বাকি। আজ স্প্যানটি বসানো হতে পারে। শেষ স্প্যান বসানোর মুহূর্তটির জন্য সাধারণ মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর ঠিক এই অংশটিতে বসবে ৪১তম স্প্যান। এর মাধ্যমে পুরোপুরি দৃশ্যমান হবে সেতুর মূল কাঠামো। গতকাল দুপুরে
পদ্ম সেতুতে আর মাত্র একটি স্প্যান বসানো বাকি। আজ স্প্যানটি বসানো হতে পারে। শেষ স্প্যান বসানোর মুহূর্তটির জন্য সাধারণ মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর ঠিক এই অংশটিতে বসবে ৪১তম স্প্যান। এর মাধ্যমে পুরোপুরি দৃশ্যমান হবে সেতুর মূল কাঠামো। গতকাল দুপুরে

পদ্মা সেতু

পদ্মার দুই পাড়ের সংযোগ আজ

পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্টিলের কাঠামো (স্প্যান) বসতে যাচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। এর মাধ্যমে বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বড় কাজের সমাপ্তি হবে। ৪১তম স্প্যানের জোড়া লাগানোর মাধ্যমে পদ্মার দুই পাড়ও যুক্ত হয়ে যাবে। অর্থাৎ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২৯ জেলার সঙ্গে সারা দেশের সরাসরি সংযোগ স্থাপিত হওয়ার পথ উন্মুক্ত হচ্ছে। এরপর সড়ক এবং রেলের স্ল্যাব বসানো সম্পন্ন হলে যানবাহন ও ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সরকার আগামী বছরের ডিসেম্বরে সেতুটি চালু করার ঘোষণা দিয়েছে।

পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি খুঁটির ওপর বসেছিল ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। বাকি ৪০টি স্প্যান বসাতে তিন বছর দুই মাস লাগল। এর মধ্যে গত দুই মাসেই ১০টি স্প্যান বসেছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত সূত্র বলছে, আগামী বছরের ডিসেম্বরে সেতু চালু করতে হলে চলতি মাসের মধ্যে সব স্প্যান বসাতেই হতো। অর্থাৎ শেষ স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে পরিকল্পনামতোই কাজ এগোচ্ছে।

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং বন্যার অত্যধিক স্রোত পদ্মা সেতুর কাজে কিছুটা গতি কমিয়ে দেয়। করোনার ক্ষতি কমাতে প্রকল্প এলাকা পুরোপুরি লকডাউন করা হয়। অর্থাৎ শ্রমিক ও প্রকৌশলী যাঁরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের প্রকল্প এলাকা থেকে বের হতে দেওয়া হয়নি। নদীর দুই পারে দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। আর বন্যার সময় বসাতে না পারলেও বাকি সব স্প্যান প্রস্তুত রাখার কাজ করা হয়। করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির ধকল কাটিয়ে ১১ অক্টোবর ৩২তম স্প্যান বসানোর পর অনুকূল আবহাওয়া পাওয়া গেছে। কারিগরি কোনো জটিলতাও তৈরি হয়নি। ফলে টানা বাকি স্প্যানগুলো বসানো সম্ভব হয়েছে।

জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর স্বপ্ন এখন সবার চোখের সামনে প্রস্ফুটিত হয়েছে। এটা আমাদের জাতীয় সক্ষমতার প্রকাশ। অনেকেই পদ্মা সেতু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। নিজস্ব অর্থায়নে সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। কিন্তু একজন ছিলেন অবিচল। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সাহসী নেতৃত্বের সোনালি ফসল দেশের মানুষ দেখতে পাচ্ছে।’ তিনি বলেন, পদ্মার দুই পারের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন দেখে আসছে। তারা জমি দিয়েছে, সহযোগিতা করেছে। এটা তাদেরও অর্জন।

সাধারণত সেতু স্টিলের অথবা কংক্রিটের হয়। কিন্তু পদ্মা সেতুটি হচ্ছে স্টিল ও কংক্রিটের মিশ্রণে। সেতুর মূল কাঠামোটা স্টিলের, যা স্প্যান হিসেবে পরিচিত। খুঁটি এবং যানবাহন চলাচলের পথ কংক্রিটের। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য দেড় শ মিটার। ৪২টি খুঁটির সঙ্গে স্প্যানগুলো জোড়া দেওয়ার মাধ্যমে পুরো সেতু দৃশ্যমান হয়েছে।

পদ্মার মূল সেতু অর্থাৎ নদীর অংশের দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। অবশ্য দুই পারে আরও প্রায় চার কিলোমিটার সেতু আগেই নির্মাণ হয়ে গেছে। এটাকে বলা হয় ভায়াডাক্ট। এর মধ্যে স্টিলের কোনো স্প্যান নেই।

পদ্মা সেতু দ্বিতলবিশিষ্ট। স্টিলের স্প্যানের ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। এই পথ তৈরির জন্য কংক্রিটের স্ল্যাব বসানোর কাজ চলছে। সম্পন্ন হয়ে গেলে পিচঢালাই করা হবে। পুরো কাজ শেষ হলে যানবাহন চলাচলের পথটি হবে ২২ মিটার চওড়া, চার লেনের। মাঝখানে থাকবে বিভাজক। স্প্যানের ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। সেতুতে একটি রেললাইনই থাকবে। তবে এর ওপর দিয়ে মিটারগেজ ও ব্রডগেজ—দুই ধরনের ট্রেন চলাচলেরই ব্যবস্থা থাকবে। ভায়াডাক্টে এসে যানবাহন ও ট্রেনের পথ আলাদা হয়ে মাটিতে মিশেছে।

পদ্মা সেতুর স্বপ্ন এখন সবার চোখের সামনে প্রস্ফুটিত হয়েছে। এটা আমাদের জাতীয় সক্ষমতার প্রকাশ
ওবায়দুল কাদের, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী

পদ্মা সেতুর জন্য অপেক্ষা প্রায় দুই যুগের। ১৯৯৮ সালে প্রাক্‌-সম্ভাব্যতা যাচাই দিয়ে এই অপেক্ষার শুরু। এর মাঝখানে অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংকসহ দাতাদের সঙ্গে জটিলতা স্বপ্নের সেতুর ভবিষ্যৎই শঙ্কায় পড়ে যায়। এর মধ্যে সরকার বিশ্বব্যাংকের ঋণ না নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ২০১৪ সালে মূল সেতুর কাজ শুরু হয়। অবশ্য জমি অধিগ্রহণ, সংযোগ সড়ক নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও অবকাঠামো নির্মাণের কাজ এর আগেই শুরু হয়েছিল। মূল সেতু ও নদীশাসনের কাজ শুরুর পর অবশ্য নানা চ্যালেঞ্জ এসেছে। কখনো পদ্মার ভাঙন, আবার কখনো কারিগরি জটিলতায় কাজ আটকে গেছে। পরিবর্তন করতে হয়েছে নকশায়। কিন্তু কাজ থেমে থাকেনি।

২০১৭ সালে পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানোর সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। সপ্তাহখানেক পর দেশে ফিরে এলে বিমানবন্দরে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র সময় রাত তিনটায় স্প্যান বসানোর খবর পান জানিয়ে ওই দিন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ওবায়দুল কাদের মেসেজ পাঠাল, তার সচিবও মেসেজ পাঠাল যে সুপার স্ট্রাকচারটা বসে গেছে। আমি বললাম, আমাকে ছবি পাঠাও। সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত ছবি এবং ভিডিও ক্লিপ পাঠাল।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, আমরা দুই বোন ওখানে কেঁদেছিলাম। রেহানা, আমি...কী যে অপমান, কত কিছু যে হয়েছে, তা বলার মতো না।’

সর্বশেষ ৪১তম স্প্যানটি বসানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত, ৮ ডিসেম্বর ২০২০

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছিলেন, ‘পদ্মা সেতু যে নিজেদের টাকায় করতে পারব; তা অনেকে বিশ্বাস করতে পারেনি। অনেক সিনিয়র কেবিনেট মেম্বাররাও বিশ্বাস করতে পারেনি। সবাই বলতেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ছাড়া কেউ করতে পারবে না। আমি বলতাম, যত দিন না নিজেরা করতে পারব, তত দিন করবই না।’

এবার শেষ স্প্যান বসানোর দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সবাই দেশে। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ঐতিহাসিক এই মুহূর্তটি উদ্‌যাপনের বড় কোনো কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। আজ সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভিডিও কলের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে শেষ স্প্যান বসানোর কাজ পর্যবেক্ষণ করবেন। সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়াও জানাবেন। সেতু বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি না হলে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে একটা অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। তবে সুবিধামতো সময়ে প্রধানমন্ত্রী হয়তো হেলিকপ্টারে সেতুর ওপর দিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।

কাজ যেভাবে এগিয়েছে

মূল সেতুর কাজ শুরু হয়েছে ২০১৪ সালের নভেম্বরে। কাজ পেয়েছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। তাদের সঙ্গে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার চুক্তি হয়। চার বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কাজ শুরুর পরের বছরই মাওয়ায় স্থাপিত নির্মাণ মাঠের বেচিং প্ল্যান্টসহ একাংশ নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। ২০১৭ সালে প্রতিটি খুঁটির নিচে মাটি পরীক্ষায় ২২টি খুঁটির নিচে নরম মাটি পাওয়া যায়। তখন নকশা সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দেয়। ফেরিঘাট স্থানান্তরেও সময়ক্ষেপণ হয়।

শুরুতে প্রতিটি খুঁটির নিচে ছয়টি করে পাইল (মাটির গভীরে স্টিলের ভিত্তি বসানো) বসানোর পরিকল্পনা ছিল। যুক্তরাজ্যের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নকশা সংশোধন করে একটি করে পাইল বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। এ জন্য খুঁটি নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হতে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত লেগে যায়। সব মিলিয়ে এই কাজে প্রায় এক বছর বাড়তি লাগে। এ জন্য মাঝে কাজে কিছুটা গতি হারায়। ঠিকাদারকে ২ বছর ৮ মাস বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে। নভেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর ৯১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

এই স্থানেই বসবে সর্বশেষ স্প্যানটি। যার মাধ্যমে পরিপূর্ণ হবে পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো

নদীশাসনের কাজও শুরু হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন। তাদের সঙ্গে চুক্তি ৮ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল চার বছরে। ২০১৭ সালের দিকে স্রোতের কারণে মাওয়ায় নদীর তলদেশে গভীর খাদ তৈরি হয়। এ ছাড়া মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে বিভিন্ন সময় ভাঙনও দেখা দেয়। ফলে নদীশাসনের কাজে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। এখন আড়াই বছর সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নভেম্বর পর্যন্ত নদীশাসনের কাজ শেষ হয়েছে ৭৬ শতাংশ। দুই পারে সংযোগ সড়ক, টোল প্লাজা ও অবকাঠামো নির্মাণের কাজ আগেই শেষ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনও সম্পন্ন হয়েছে। সব মিলিয়ে নভেম্বর পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ এগিয়েছে ৮২ দশমিক ৫০ শতাংশ।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নির্মাণকাজের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রকৃতিগত ও কারিগরি নানা চ্যালেঞ্জ এসেছে। এর জন্য হয়তো সময় কিছুটা বেশি লাগছে। তবে এখন আর তেমন জটিলতা নেই। তিনি বলেন, কারিগরি কোনো সমস্যা এলে বিশ্বের সেরা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সমাধান করা হয়েছে। তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল নির্মাণকাজের সেরা মান নিশ্চিত করা। সেটা তাঁরা প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন।

পদ্মা সেতুতে শেষ স্প্যানটি বসানো বাকি

ব্যয় ও সেতুর প্রভাব

২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মা সেতু নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিস্তারিত সমীক্ষার পর ২০০৪ সালে মাওয়া-জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতু নির্মাণের পরামর্শ দেয় জাপানের দাতা সংস্থা জাইকা। ২০০৭ সালে একনেকে পাস হওয়া পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। ২০১১ সালে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় দফা সংশোধনের পর ব্যয় দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। এরপর প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন না করে ২০১৮ সালের জুনে আবারও ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। প্রকল্প শেষ হওয়ার আগে আরেক দফা প্রস্তাব সংশোধন করতে হবে।

পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে জিডিপি বৃদ্ধি পাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। মোংলা বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। সব মিলিয়ে পদ্মা সেতু অর্থনীতিতে যেমন প্রভাব ফেলবে, সহজ হবে মানুষের চলাচলও।