করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে এখন সারাবিশ্ব অচল। এ সংক্রমণ ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অনির্দিষ্টকালীন লকডাউনের জন্য দেশের সমস্ত নিম্ন আয়ের মানুষ খাদ্যের অভাবে ভুগছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, দেশের ১৪ শতাংশ মানুষের ঘরে খাবার নেই। যদিও দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে, কিন্তু পরিবহন সংকটের জন্য খাদ্যশস্য সঠিকভাবে ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে পারছেনা। যার সুযোগ নিয়ে কিছু সুবিধাভোগী খাদ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরী করছে।
শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। এ সময় যেন কোন ধরনের খাদ্য সংকট যেন দেখা না দেয় সেজন্য আমরা পতিত জমিতে, বাড়ির ছাদে বা বাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গায় গ্রীষ্মকালীন শাক সবজির মধ্যে কলমিশাক, পুঁইশাক, ঝিঙা, ধুন্দল, শসা, ঢেঁড়স, পটল, মরিচ, বেগুন, টমেটো চাষাবাদ করতে পারি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ সংকট মোকাবিলায় কৃষি ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিয়েছেন যার মধ্যে ৫% ভর্তুকি, উৎপাদন অব্যাহত রাখার জন্য ৪% হারে ঋণ দেওয়ার কথা বলেছেন। এ ছাড়া বীজ ক্রয়ে, কৃষিপণ্য পরিবহনে বাধা দিতে ও নিষেধ করেছেন। তাই কৃষক অথবা উৎসাহিত যে কেউ উপজেলা কৃষি অফিস অথবা বীজের দোকান থেকে সংগ্রহ করতে পারবে অথবা সনাতন পদ্ধতিতে বীজ (টমেটো, মরিচ, বেগুন, লাউ) উৎপাদনের মাধ্যমেও করতে পারবেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, এই দুঃসময়ে কৃষি উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে, সামনের দিনগুলোতে যেন কোন খাদ্য সংকট না হয় তাই একখণ্ড জমিও ফেলে রাখা চলবে না। বসতবাড়ির আশেপাশে বা ছাদে চাষাবাদের মাধ্যমে আমরা যেমন কৃত্রিম খাদ্য সংকট মোকাবিলা করতে পারব তেমনি আর্থিকভাবেও লাভবান হতে পারব। এ ছাড়া ভেজালহীন খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে সেই সাথে আমাদের এই একঘেয়ে বন্দী জীবনে আসবে অন্যরকম অনুভূতি যা আমাদের দিবে মানসিক প্রশান্তি।
অবসর সময়ে চারা রোপন থেকে শুরু করে যত্ন নেওয়া, সার কিংবা পানি দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের অবসর সময়গুলো অতিবাহিত করা সম্ভব হবে, পাশাপাশি হোম কোয়ারেন্টিনও নিশ্চিত হবে। এ বিষয়ে যেকোনো পরামর্শের জন্য আমরা বিভিন্ন কৃষি ভিত্তিক অ্যাপসের (কৃষকের জানালা, পেস্টিসাইড প্রেসক্রিপশন, কৃষি তথ্য সার্ভিস) সাহায্য নিতে পারি।
তাই আমাদের সবার উচিত এ সংকটের সময়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজেদের পতিত জমিতে বা ছাদকৃষির মাধ্যমে সবজি চাষ করা ও সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা।
লেখক: শিক্ষার্থী, চতুর্থ বর্ষ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ