পঞ্চগড়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফুলবাগানের প্রাচীর ধসে নীলা আক্তার (৮) নামের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী নিহত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শহরের ১ নম্বর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত স্কুলছাত্রী নীলা পঞ্চগড় শহরের মিলগেট-ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা ও পঞ্চগড় চিনিকলের কর্মচারী আনোয়ার হোসেনের মেয়ে।
স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক না থাকায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্কুলের মূল ফটকসংলগ্ন ফুলবাগানের পুরোনো প্রাচীরের পাশে খেলছিল নীলা। আরও দুই শিক্ষার্থী ওই প্রাচীরে লাগানো ছোট ফটকের পাল্লা ধরে ঝুলছিল। একপর্যায়ে প্রাচীরটি নীলার ওপর ধসে পড়লে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হয় নীলা। এ সময় অভিভাবক ও শিক্ষকেরা তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ, দুর্ঘটনা ঘটার পর কোনো শিক্ষক স্কুল থেকে বের হননি। রুবিনা আক্তার নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘নীলাসহ বেশ কয়েকটি শিশু প্রাচীরের পাশে খেলা করছিল। এ সময় প্রাচীরটি ধসে পড়লে চাপা পড়ে নীলা। মেয়েটির চিৎকার শুনেও কোনো শিক্ষক স্কুল থেকে বের হননি। স্কুলের আয়াসহ আমরা তাকে উদ্ধার করি। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।’ তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুল হক দাবি করেন, শিক্ষকেরাই নীলাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহরিয়ার কবীর বলেন, ‘দুপুর ১২টায় ওই ছাত্রীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তবে আমরা শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। শিশুটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ছাড়া শিশুটির বুকে ও মুখে আঘাত ছিল।’
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী প্রথম আলোকে বলেন, প্রাচীর ধসে নিহত ওই স্কুলছাত্রীর লাশ পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে আছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ছাত্রীর লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া নিহত শিশুটির পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।