ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও হত্যা মামলায় ফেনীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি কে এনামুল করিমের নিষ্ক্রিয়তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ৩০ দিনের মধ্যে ওই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। জনপ্রশাসন সচিব ও শিক্ষাসচিবের প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ ৩০ জুন ওই রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম।
পরে ইউনুছ আলী আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, আদালত আগামী ২০ আগস্ট পরবর্তী শুনানির জন্য দিন রেখেছেন।
৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় হাত-পা বেঁধে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালান মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার অনুগত ব্যক্তিরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল নুসরাত মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই অসহযোগিতার অভিযোগ ছিল। দায়দায়িত্ব খতিয়ে দেখতে পুলিশ সদর দপ্তর পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির দায়িত্বশীল একটি সূত্র নিশ্চিত করে, নুসরাতের মা তাঁর বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি কে এনামুল করিমের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনেন।
ফেনীর একাধিক সূত্র জানায়, যাঁর বিরুদ্ধে নুসরাতের মায়ের অভিযোগ, ফেনীর সেই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি কে এনামুল করিম সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি। ওই মাদ্রাসারই অধ্যক্ষ ছিলেন সিরাজ উদদৌলা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এর আগেও মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও অর্থ তছরুপের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগ নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি ব্যবস্থা নেননি। নুসরাতকে হত্যার ঘটনায় প্রশাসনের কোনো ভুলত্রুটি ছিল কি না, খতিয়ে দেখতে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, পি কে এনামুল করিম ওই কমিটিরও প্রধান।