নিয়ম না মানলে বিমানে চড়াই বন্ধ, সতর্কবার্তা প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করেন। ঢাকা, ২৮ ডিসেম্বর। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করেন। ঢাকা, ২৮ ডিসেম্বর। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান পরিবহনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করে ভিআইপি, ভিভিআইপিসহ সব বিমানযাত্রীকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা মেনে চলার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যদি কেউ এ ক্ষেত্রে বাধা দেন, তাহলে ভবিষ্যতে তাঁর বিমানে চড়াই বন্ধ হয়ে যাবে। নিরাপত্তার যে নিয়মাবলি রয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, আমাদের সব যাত্রীকে সেটা মেনে নিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।

আজ বিমানবন্দরের যাত্রী পরিবহন এবং মালপত্র আনা নেওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি একই সঙ্গে বিমানের পঞ্চম ও ষষ্ঠ ড্রিমলাইনার ‘সোনার তরী’ ও ‘অচিন পাখি’র উদ্বোধন করেন এবং বিশ্বের সব স্থান থেকে বিমানের টিকিট কেনার সুবিধাসংবলিত একটি মোবাইল অ্যাপসও অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে আমি স্পষ্ট বলতে চাই, এখানে আমাদের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধানগণ ও অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও রয়েছেন। আপনারা যখন বিদেশে যান, তখন যেভাবে নিরাপত্তাটা নিশ্চিত করা হয়, ঠিক সেইভাবে আমাদের বিমানবন্দরে করতে হবে এবং সেটা সবাইকে মেনে নিতে হবে। সেখানে কেউ কোনো বাধা দিতে পারবেন না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখবেন, সারা দিন আমি দেশের কাজই করি। কোথায় টুকটাক কী হয় না হয়, সে খবরটা নেওয়ার চেষ্টা করি। কাজেই কেউ সেখানে কোনো রকম অনিয়ম বা ব্যত্যয় ঘটালে সঙ্গে সঙ্গেই আমার কাছে খবরটা চলে আসে। এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে এবং সে অনুয়ায়ী নজরদারিটা বাড়াতে হবে।’

বেসামরিক বিমান পরিবহন এবং পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এম মাহবুব আলী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনকালে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ২৮ ডিসেম্বর। ছবি: ফোকাস বাংলা

অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো ও জাইকার বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ হিতোসি হিরোকা বক্তব্য দেন। সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান স্বাগত ভাষণ দেন এবং বিমানের সিইও মুকাব্বির হোসেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিমানের নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনাল এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি অডিও ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা প্রদর্শিত হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, সরকারের উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং বিদেশি কূটনীতিক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী ভাষণে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির পুনরুল্লেখ করে বলেন, ‘আজকে আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। যে-ই দুর্নীতি করবে তাকে কিন্তু ছাড়া হবে না। সে যে-ই হোক না কেন।’ প্রধানমন্ত্রী সময়মতো তৃতীয় টার্মিনালের কাজ শেষ করারও তাগিদ দেন।