খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সরকার জিরো টলারেন্সে (শূন্য সহিষ্ণুতা) নীতিতে রয়েছে। যেকোনো মূল্যে নিরাপদ ও ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে চায় সরকার।
আজ শনিবার নওগাঁয় জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সকাল সাড়ে ৮টায় শহরের এলএসডি (স্থানীয় সরবরাহ ডিপো) খাদ্যগুদাম চত্বর থেকে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে নওগাঁ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক হয়ে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সুস্থ সবল জাতি চাই-পুষ্টিসম্মত নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নাই’।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন আমাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী ইশতেহারে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের কথা বলেছেন। তাই এই বিষয়টি এখন সরকারি ম্যান্ডেটে পরিণত হয়েছে। আমাদের এই ম্যান্ডেট অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে।’
সাধন মজুমদার বলেন, নিরাপদ ও ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিতে সরকার জিরো টলারেন্সে রয়েছে। যে কোনো মূল্যে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সরকারি সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু সরকারি কর্মকর্তারাই নয়, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে দেশে বর্তমানে ৪৬৩টি সংস্থা কাজ করছে। ’
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে মন্ত্রী পরিষদ সচিবকে নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেকটি জেলায় ও উপজেলায় তদারকি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এসব কমিটির মূল উদ্দেশ্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। কারণ নিজেরা সচেতন না হলে সরকারের একার পক্ষে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত থেকে শুরু করে রান্নাঘর পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ভেজাল খাদ্য যাতে সরবরাহ করতে না পারে সেই লক্ষ্যে সরকার কাজ শুরু করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকার রেস্তোরাঁগুলোর মান অনুযায়ী গ্রেডিং করার কাজ শুরু করা হয়েছে। সবুজ, লাল ও হলুদ রং করে দিয়ে রেস্তোরাঁর মান চিহ্নিত করা হচ্ছে। যাদের মান খারাপ তাঁদের সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত জোরদার করা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশিদুল হক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কামাল হোসেন, জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার প্রমুখ।