গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ত্রাণ শাখার মারা যাওয়া কর্মচারী করোনা পজিটিভ বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার।
আজ শনিবার রাতে মৃত ওই ব্যক্তির স্ত্রী প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম বেপারী স্বাক্ষরিত শোকবার্তায় জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকাল নয়টায় সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হসপিটাল লিমিটেড থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
ওই ব্যক্তির স্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামীর করোনার কোনো উপসর্গ ছিল না। তাঁর আগে ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল। কিছুদিন ধরে করোনা পরিস্থিতির কারণে তাঁর কাজের অনেক চাপ যাচ্ছিল। তাই নিয়মিত ওষুধ খেতে পারেননি। বাড়িতে এলেই বলতেন শরীরটা দুর্বল লাগছে। গত বুধবার রাতে তাঁর পেটে গ্যাস চাপ দেয়। গ্যাসের ওষুধ খেলেও কমেনি। একপর্যায়ে তিনি দুবার পাতলা পায়খানা করেন। বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকার বাড়ি থেকে তাঁকে সাইনবোর্ড প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হসপিটাল লিমিটেডে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর স্বামীর সোয়াবের নমুনা করোনা পরীক্ষার জন্য রেখে দেয়। লাশ রাজধানীর খিলগাঁওয়ে দাফন করা হয়। গতকাল শুক্রবার রাতে তিনি মুঠোফোনে এসএমএস পান তাঁর স্বামীর করোনা পজিটিভ এসেছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করা হলে সেই রিপোর্ট আমরা জানতে পারব না।’
গত বুধবার নারায়ণগঞ্জে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের করোনা পজিটিভ আসে। এরপর থেকে ওই ম্যাজিস্ট্রেট আইসোলেশনে আছেন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা তাঁর করোনা পজিটিভের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের কোয়ারেন্টিনে আনতে হবে। তিনি বলেন, ‘যাঁদের করোনা ধরা পড়ছে, তাঁদের অনেক মানুষ ঘৃণা করতে শুরু করেছে। মনে করা হচ্ছে তিনি অনেক বড় অপরাধ করে ফেলছিলেন। অথচ আমাদের ওই মানুষগুলোকে আলাদা রেখে সাপোর্ট দিতে হবে। তাহলেই তাঁরা সুস্থ হয়ে উঠবেন।’ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের করোনা পজিটিভ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ও আগে থেকে অসুস্থ ছিল। তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু আমি অনেক দিন যাবৎ অফিসে যাই না, তাই বিষয়টি সঠিক বলতে পারছি না।’
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ৯ এপ্রিল থেকে তাঁর বাংলাতে কোয়ারেন্টিনে আছেন। ১১ এপ্রিল তাঁর নমুনা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসে।