নাম পাবে বেনামি আমগুলো

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন বেনামি গুটি জাতের আমের বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ ও নামকরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট রাজার বাগানে বিভিন্ন গুটি জাতের আমের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গুটি জাত হিসেবে পরিচিত বেনামি আমের নামকরণ ও বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে সরকারি মালিকানাধীন রাজার বাগানে আজ সোমবার থেকে কাজ শুরু করেছেন আমবিজ্ঞানী, উদ্যানতত্ত্ববিদ, কৃষিবিদ, আমচাষি ও প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সদস্যরা। প্রথম দিনে এখান থেকে ১৭ ধরনের আম সংগ্রহ করা হয়েছে।

কমিটির আহ্বায়ক চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এ কে এম তাজকির-উজ-জামান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ব্র্যান্ড পণ্য। আমবিজ্ঞানীদের মতে, এ জেলায় ৩০০-৩৫০ জাতের আম আছে।

নামীদামি আমের চেয়ে বেনামি ও অপরিচিত আমের সংখ্যা অনেক বেশি। এসব আমের মধ্যে এমন অনেক আম আছে, যেগুলো স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়। নাম-পরিচয় বা প্রচার না থাকায় এসব আম বাজার পায় না। ফলে স্থানীয় এবং জেলার বাইরের স্বাদ-বৈচিত্র্য গ্রহণে আগ্রহী আমপ্রেমীদের পাতেও উঠছে না এসব আম। দামও পান না আমচাষিরা। ফলে অনেকেই গুটি জাতের আম হিসেবে গণ্য অনেক গাছ কেটে ফেলছেন। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে অনেক আম।

গুটি জাতের এসব আম থেকে কমপক্ষে ১০০ জাত নিয়ে একটি অ্যালবাম প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। আমবিজ্ঞানী, উদ্যানতত্ত্ববিদ, কৃষিবিদ, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ১২ সদস্যের এই কমিটি আম নির্বাচন করে তার নামকরণ করবে এবং বৈশিষ্ট্য লিপিবদ্ধ করবে।

ফাইল ছবি

কমিটির আহ্বায়ক এ কে এম তাজকির-উজ-জামানের সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে গত রোববার প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সব সদস্যের উপস্থিতিতে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বিশেষজ্ঞ সদস্যসহ আজ সোমবার থেকে কাজ শুরু হবে। সে অনুযায়ী রাজার বাগানে যান সদস্যরা। ১০০ বিঘা আয়তনের বাগানটিকে ইতিমধ্যেই বঙ্গবন্ধু লাইভ ম্যাঙ্গো মিউজিয়াম হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। এখানে নানা জাতের প্রায় আড়াই হাজার আমগাছ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অনেক বেনামি সুস্বাদু জাতের আম আছে। অনেক আম আছে যেগুলোর বয়স দেড় শ-দুই শ বছর।

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (আম গবেষণা কেন্দ্র) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জমির উদ্দীন এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, আমের জাত বিকাশে এটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। ভবিষ্যতের গবেষণায়, জাত উন্নয়নে এ উদ্যোগ অবদান রাখবে। এ জাতগুলোকে বিলুপ্তির হাত থেকেও রক্ষা করবে। এতে আমচাষিরা লাভবান হবেন। দেশও লাভবান হবে।