দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দিন দিন বিদেশেও নরসিংদীর লটকনের কদর বেড়ে চলেছে। দেশীয় এই ফলের চাহিদা এখন অনেক। এ কারণে জেলায় অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে লটকন উৎপাদন করছেন। ডুমুরের মতো এ গাছেও লম্বা বৃন্তে গুচ্ছাকারে ফল ধরে। একটি গুচ্ছে ২০ থেকে ৩০টি পর্যন্ত ফল ধরে। লটকনের মোটা খোসার ভেতর তিন-চারটি রসালো কোষ থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাড়ির আঙিনায় বা বড় বড় গাছের নিচে অধিক ছায়াযুক্ত জায়গায় খুব সহজেই লটকনের আবাদ করা যায়। গাছ লাগানোর চার-ছয় বছরের মধ্যে ফল ধরে। একেকটি গাছে ১২০-১৩০ কেজি পর্যন্ত ফলন হয়। টানা ১৮-২০ বছর গাছে পর্যাপ্ত ফলন হয়। এ বছর জেলার বেলাব, শিবপুর, মনোহরদী ও রায়পুরা উপজেলায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে লটকনের আবাদ হয়েছে। মৌসুমে এখানে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন লটকন উৎপাদন হয়, যার আনুমানিক দাম ২৫-৩০ কোটি টাকা। বটেশ্বর গ্রামের লটকনচাষি কাউছার মিয়া বলেন, ‘একসময় লটকনের চাহিদা ছিল না বললেই চলে। এখন বিদেশেও ক্রমেই লটকনের চাহিদা বাড়ছে। এ বছর ১০ বিঘা জমিতে লটকনের আবাদ করেছি। ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকার লটকন বিক্রি করেছি।’মরজাল বাজারে লটকন বিক্রি করতে আসা শিবপুরের জয়নগর এলাকার মজিদ মিয়া বলেন, ‘প্রতি মণ লটকন বিক্রি হয় আড়াই থেকে চার হাজার টাকায়। পাইকারি প্রতি কেজি বিক্রি করছি ৮০-১২০ টাকা দরে।’ মৌসুমি ফলব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারক স্বপন গাজী বলেন, ‘আমরা সরাসরি বিদেশে পাঠাইতে পারি না। আমি নিয়া রপ্তানিকারকের কাছে বিক্রি করি। হে বিদেশে পাঠায়।’ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নরসিংদীর উপপরিচালক মুকছেদ আলী বলেন, দেশের পাশাপশি মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে এখানকার লটকনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।’