রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় নবজাতককে খুন করার অভিযোগে ওই নবজাতকের মায়ের নামে মামলা হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি পুলিশ বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় ওই খুনের মামলা করে।
কাল বৃহস্পতিবার ওই মামলায় নবজাতকের মাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। ওই নারীর নাম নার্গিস (২২)। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শরিফুল ইসলাম।
মামলার বিবরণ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুর থানার রায়েরবাজার এলাকার মোকাব খান রোডের একটি ডাস্টবিনে এক ছেলে নবজাতকের লাশ পড়ে ছিল। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নবজাতকটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করে। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। পরে নবজাতকের মা সন্দেহে নার্গিস নামের এক নারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ওই নারী স্বীকার করেন, পরিবারের কাউকে না জানিয়ে শামীম নামের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরে তাঁকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর নার্গিস জানতে পারেন, তাঁর স্বামী শামীম এর আগে আরও তিনটি বিয়ে করেছেন। শামীমের সঙ্গে দুই বছর ঘর-সংসার করার পর নার্গিস তাঁর মায়ের কাছে চলে আসেন। ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছিলেন তিনি। তবে শামীমের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। একপর্যায়ে নার্গিস অন্তঃসত্ত্বা হন। এই খবর জানানোর পর নার্গিসের ওপর ক্ষিপ্ত হন শামীম। নার্গিসকে হুমকি দেন, এই বাচ্চা তাঁর (শামীম) সামনে আনলে হত্যা করে ফেলবে। গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর নার্গিস তাঁর মায়ের বাসায় আসেন। ২০ ডিসেম্বর বিকেল চারটার দিকে প্রসববেদনা হলে তিনি যান বাথরুমে। সেখানে নবজাতকের জন্ম হয়। পরে নবজাতককে ডাস্টবিনে ফেলে দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ডাস্টবিন থেকে পাওয়া নবজাতকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য আলামত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) পাঠানো হয়। ফরেনসিক প্রতিবেদনে নিশ্চিত হয়, ওই নবজাতকের মা হলেন নার্গিস। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আসামি নার্গিস তাঁর গর্ভের সন্তানের পরিচয় গোপন করার উদ্দেশ্যে জীবিত সন্তান জন্ম দেওয়ার পর হত্যা করেন। লাশ গোপন করার জন্য নবজাতকের লাশ ডাস্টবিনে লুকিয়ে রাখেন।
২৭ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরিফুল ইসলাম ঢাকার আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে বলেন, নবজাতককে হত্যা রহস্যের প্রকৃত ঘটনার উদ্ঘাটনের জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।