কিছুটা নিভৃতচারী ছিলেন। মৃত্যুর আগের প্রায় এক দশক এড়িয়ে গেছেন সভা-সেমিনার, এমনকি বন্ধুবান্ধবের আড্ডাও। তাঁর মৃত্যুর খবরটিও গণমাধ্যম জানতে পেরেছিল দুই দিন পর।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাহিত্যিক আবু রুশদের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী ছিল গতকাল ২৫ ডিসেম্বর। ঘরোয়া আয়োজনে উদ্যাপিত জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত মানুষেরা বললেন, আবু রুশদকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করানো খুব জরুরি।
পুরো নাম সৈয়দ আবু রুশদ মতিনউদ্দিন। সর্বশেষ ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন। এর আগে চাকরি করেছেন একাধিক সরকারি কলেজে, বিদেশি দূতাবাসেও। তাঁর ছোটগল্প ও উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রথম যৌবন, শাড়ি বাড়ি, গাড়ি, মহেন্দ্র মিষ্টান্ন ভান্ডার, দিন অমলিন, নোঙর, সামনে নতুন দিন, ডোবা হলো দীঘি। এই ছাড়া আছে সমালোচনামূলক গ্রন্থ, তিন খণ্ডের আত্মজীবনী, অনুবাদগ্রন্থও। ২০১০-এর ২৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় খ্যাতিমান এ সাহিত্যিকের।
আবু রুশদের জন্মদিন উপলক্ষে ছোট্ট ঘরোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় গতকাল তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে। অনুষ্ঠানে ছিল বিশিষ্ট এই লেখকের জীবনী পাঠ, স্মৃতিচারণে ও রবীন্দ্রসংগীতের পরিবেশনা।
জন্মদিনে লেখকের ব্যক্তিগত সংগ্রহের প্রায় দুই শ বই দান করা হয় দনিয়া পাঠাগারকে। লেখক-পত্নী আজিজা ইসমাইলের কাছ থেকে বই নিয়ে দনিয়া পাঠাগারের সভাপতি মো. শাহনেওয়াজ বলেন, এই বই পাঠাগারকে আরও সমৃদ্ধ করবে। দনিয়া পাঠাগার নতুন প্রজন্মের কাছে আবু রুশদকে তুলে ধরতে সচেষ্ট থাকবে।
দনিয়া পাঠাগারের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন লেখকের ভাগনে, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সদরুল হুদা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আফসানা আক্তার, দনিয়া পাঠাগারের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।
আলোচক ও লেখকের পরিবারের সদস্যরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে এসে কিংবা তার আগে লেখালেখি থেমে গিয়েছিল বলে হয়তো এ প্রজন্মের পাঠকেরা আবু রুশদকে তেমনভাবে চেনেন না। তাঁর লেখা গল্প-উপন্যাস অথবা আত্মজৈবনিক রচনাগুলোও তেমন সুলভ নয়। ফলে তাঁর নাম ও রচনা প্রায় বিস্মৃতির আড়ালে চলে গেছে বলেই মনে হয়। এখন তাঁর লেখা পত্রকে নতুনভাবে পাঠকের দরজায় হাজির করা জরুরি।
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন দনিয়া পাঠাগারের শিল্পীরা।