নজরুল ইসলামের নগদ টাকা বেড়েছে ৫২৭ গুণ

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নগদ ছিল সাড়ে চার হাজার টাকা। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে তাঁর নগদ টাকা বেড়েছে ৫২৭ গুণ! আগে গাড়ি না থাকলেও এখন গাড়ি আছে।

শুধু নগদ টাকা নয়, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি দুটোই বেড়েছে এই সাংসদের। তবে বার্ষিক আয় কমেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

একই আসনে নজরুল ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী ২০-দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদের আয় ও সম্পদ বেড়েছে ১৯ গুণ। তাঁর এখন নগদ আছে ৩৮ লাখ ৪২ হাজার টাকা। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ছিল ২ লাখ ১১ হাজার টাকা। তিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেননি। 

মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী


মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে দেওয়া হলফনামার তথ্যমতে, নজরুল ইসলাম চৌধুরীর অস্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য ছিল ৫৪ লাখ ৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে নগদ সাড়ে চার হাজার টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, তালিকাভুক্ত বা তালিকাভুক্ত নয়—এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগ ছিল ৫১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। স্বর্ণ ও মূল্যবান অলংকার ছিল ২৫ হাজার টাকার।

এখন তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। যার মধ্যে নগদ হচ্ছে ২৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা জমা না থাকলেও বর্তমানে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা আছে। বন্ড, ঋণপত্র, তালিকাভুক্ত বা তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগের পরিমাণ কমে ৪৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। তাঁর গাড়ির দাম ৫০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।

নজরুল ইসলাম চৌধুরীর ব্যবসায় মূলধন ও বিমার পরিমাণ গতবার ছিল ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ লাখ ২৩ হাজার টাকা। এ খাতে ২০১৪ সালে স্ত্রীর ৮০ হাজার টাকা থাকলেও এখন আছে ২৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা।

গতবার স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৯২ লাখ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪০ হাজার টাকায়। গত নির্বাচনের আগে ৮২ লাখ টাকা দায় থাকলেও এখন কোনো দায় নেই পেশায় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম চৌধুরীর। আগে কৃষিজমি না থাকলেও এখন ১৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকার কৃষিজমি আছে তাঁর।

শিক্ষাগত যোগ্যতায় স্নাতক পাস নজরুল ইসলাম চৌধুরীর একটি মামলা থাকলেও তা খারিজ হয়ে গেছে।

জানতে চাইলে সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বাড়িভাড়া, সাংসদ হিসেবে ভাতা, কোম্পানির ভাতা, বিমা কোম্পানি থেকে আয়ের কারণে নগদ টাকা বেড়েছে। তবে এর বিপরীতে যথাযথভাবে আয়কর দেওয়া হয়েছে। 

অলি আহমদ


অলি আহমদ

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অলি আহমদের অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ৩৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। ১০ বছর পর এসে তা হয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। তাঁর স্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে ২৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা থেকে ৬২ লাখ ৬৮ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে।

অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে জমা ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা। একসময় বন্ড, ঋণপত্র, তালিকাভুক্ত বা তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগ থাকলেও এখন তা নেই।

গৃহসম্পত্তি, চাকরির পেনশন থেকে মূল আয় হয় অলি আহমদের। ১০ বছর আগে তাঁর আয় ছিল ৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। বর্তমানে তাঁর বার্ষিক আয় ১৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকান ভাড়া থেকে আয় ১০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। পেনশন পান ৫ লাখ টাকা।

অলি আহমদের ঢাকায় পাঁচতলা দালান আছে। পাঁচ কাঠা অকৃষিজমি আছে। ২৫ একর রাবারবাগান রয়েছে তাঁর। স্ত্রী চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘিতে পাঁচতলা ভবনের অংশীদার।

পিএইচডি করা অলি আহমদের ২০০৮ সালে ১৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা দায় থাকলেও এখন কোনো দায় নেই।