দেশে প্রতি ৫ জনে একজন ভুগছেন উচ্চ রক্তচাপে

দেশে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতি ৫ জনের ১ জন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। উচ্চ রক্তচাপের কারণে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ, বিশেষত হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, উচ্চ রক্তচাপের বিষয়ে গণসচেতনতা তৈরি, ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) কর্মসূচি। তবে উচ্চ রক্তচাপের ক্রমবর্ধমান প্রকোপ ও বিস্তার কমাতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যমসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসি প্রোগ্রাম, প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে এই ‘মিট দ্য প্রেস’ আয়োজন করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন’।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ ক্রমবর্ধমান। এই সংকট মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যম—সবাইকেই সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিক বলেন, ‘আমাদের প্রতিরোধব্যবস্থার ওপর জোর দিতে হবে। শুধু হাসপাতাল বানিয়ে উচ্চ রক্তচাপের মতো অসংক্রামক রোগের প্রকোপ থেকে জাতিকে রক্ষা করা যাবে না।’

অনুষ্ঠানে বলা হয়, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় ২০১৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এনসিডি কর্নার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এর মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা এবং ফলোআপ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সারা দেশে এই কর্নারের সংখ্যা ২০০তে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদ্‌রোগ ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করতে হবে। যেমন অতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিহার করা, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা, অতিরিক্ত ওজন কমানো, তামাক ও মদ্যপান পরিহার করা, নিয়মিত ব্যায়াম করাসহ শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার বিষয়ে সচেতনতা জরুরি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর বাংলাদেশের কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রুহুল কুদ্দুস, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী, কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট মীর ইশরাকুজ্জামান ও প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের।