দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকসংখ্যায় নতুন মাইলফলক তৈরি হলো। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হিসাবে, গত সেপ্টেম্বর মাস শেষে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১১ কোটি ছাড়িয়েছে।
বিটিআরসি আজ সোমবার গ্রাহকসংখ্যার এ হিসাব প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে ২৯ লাখ। ফলে মোট গ্রাহক দাঁড়ায় ১১ কোটি ১১ লাখে। এর মধ্যে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রায় ১০ কোটি ২৫ লাখ। আর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগধারী রয়েছেন ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার।
উল্লেখ্য, ব্রডব্যান্ডে একটি সংযোগের বিপরীতে গড়ে চারজন গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করে বলে গণ্য করা হয়। বিটিআরসির হিসাবে সর্বশেষ ৯০ দিনের মধ্যে কোনো ব্যক্তি এক দিন ইন্টারনেটে প্রবেশ করলেই তাঁকে গ্রাহক হিসেবে গণ্য করা হয়।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর ইন্টারনেট গ্রাহক কমেছিল। মার্চে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল প্রায় ১০ কোটি ৩৩ লাখ, যা মে মাস শেষে ১১ লাখ কমে যায়। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাড়ছে।
মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার কারণে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি ডিজিটাল বিপ্লব সাধিত হয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, সম্প্রতি অনেক নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। আবার এমন অনেক গ্রাহকও আছেন, যাঁরা আগে অনিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন, তাঁরা এখন অনেক বেশি ব্যবহার করছেন। সামগ্রিকভাবে মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহারে একটা পরিবর্তন এসেছে, যার ফলে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে।’
মুঠোফোনের সঙ্গে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহক বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে। মার্চে দেশে ব্রডব্যান্ড গ্রাহক ছিল ৮০ লাখ ৮০ হাজার। এখন তা প্রায় পৌনে ছয় লাখের বেশি।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ইন্টারনেট গ্রাহক বৃদ্ধির কারণ, এখন এ সেবা ছাড়া অনেক কাজই করা যায় না। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পড়াশোনা করছেন। অনেকে বাসায় থেকে অফিস করছেন ইন্টারনেটের মাধ্যমে। নারী ইন্টারনেট গ্রাহক অনেক বেড়েছে।
বাড়ছে মুঠোফোন গ্রাহকও। সেপ্টেম্বর শেষে মুঠোফোন গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৭১ লাখ। মার্চে দেশে মুঠোফোন গ্রাহক ছিল ১৬ কোটি ৫৩ লাখ। জুন শেষে তা ৪০ লাখ কমে যায়। জুলাই থেকে মুঠোফোন গ্রাহক আবার বাড়ছে। উল্লেখ্য, ৯০ দিনের মধ্যে মুঠোফোনের সিমে কোনো সেবা নিলেই তাঁকে সক্রিয় গ্রাহক হিসেবে গণ্য করা হয়।