দেশের বিভিন্ন কারাগারে বর্তমানে ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ বন্দী রয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে কারাগারের ধারণক্ষমতা ও বন্দীর তথ্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তাঁর দেওয়া তথ্য থেকে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।
সরকারি দলের সাংসদ মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ৮২ হাজার ৬৫৪ জন বন্দী আটক আছেন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ৭৯ হাজার ৪৫৪ জন ও নারী ৩ হাজার ২০০ জন। দেশের জনসংখ্যা অনুপাতে কারাগারের ধারণক্ষমতা কত হবে, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানদণ্ড নেই। বাংলাদেশের ৬৮টি কারাগারের বর্তমান বন্দী ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৪৫০ জন।
সরকারি দলের সাংসদ দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজধানী ঢাকা ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জনসংখ্যা অনুপাতে পুলিশ সদস্যের সংখ্যা যথেষ্ট নয়। রাজধানী ঢাকা ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জনবল বৃদ্ধির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা/ইউনিট থেকে প্রস্তাব পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
বর্তমান সরকারের বিগত দুই মেয়াদে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে বিভিন্ন পদবির মোট ৯ হাজার ৪৫৬টি এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে বিভিন্ন পদবির ২ হাজার ১৩১টি নতুন পদ সৃজন করা হয়েছে বলে সংসদে জানানো হয়।
জামালপুর-৫ আসনের সাংসদ মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বারিধারা কূটনৈতিক এলাকায় দূতাবাস/হাইকমিশন অফিস স্থানান্তরের জন্য কয়েকটি দূতাবাস/হাইকমিশনের জমির চাহিদা রয়েছে। তবে জমির অপ্রতুলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ব্যাপারে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউকসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় চলছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এখন পর্যন্ত ১০টি বিদেশি দূতাবাসের প্লটের আবেদন প্রক্রিয়াধীন। বিশেষত ব্রাজিল, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কুয়েত, মিয়ানমার ও আফগানিস্তান তাদের দূতাবাস স্থাপনের সূচনালগ্ন থেকেই এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে আসছে। এ ছাড়া ঢাকায় অবস্থিত ৫০টি কূটনৈতিক মিশনের মধ্যে যারা বরাদ্দপ্রাপ্ত বা নিজস্ব ক্রয়কৃত জমি ব্যবহার করছে না, তারাও আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে বলে ইতিমধ্যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজউক থেকে পাওয়া তথ্যমতে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ইতিমধ্যেই একটি ডিপ্লোম্যাটিক জোন করা হয়েছে। রাজধানীতে নানামুখী উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান। যার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা শহর চারদিকে দ্রুতগতিতে প্রসারমাণ। এদিকে দূতাবাস স্থাপনের জন্য নতুন নতুন চাহিদার বিপরীতে ঢাকার গুলশান ও বারিধারা কূটনৈতিক জোনে পর্যাপ্ত জমির সংকুলান করা অতি দুরূহ। এ অবস্থায় পূর্বাচলে দূতাবাস স্থাপনের জন্য নির্ধারিত কূটনৈতিক জোন গড়ে তোলা প্রয়োজন হতে পারে।
নওগাঁ-২ আসনের শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, হাঙ্গেরি সরকার বাংলাদেশে একটি কনস্যুলার অফিস স্থাপনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সম্মতি চেয়েছে। হাঙ্গেরির আবেদনটি প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া বাংলাদেশে দক্ষিণ আফ্রিকার দূতাবাস স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
ঢাকা-১১ আসনের সাংসদ এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশিদের অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা মোকাবিলায় আইনি সহায়তার লক্ষ্যে বিদ্যমান বাংলাদেশ মিশনগুলোয় কোনো আইন সহায়তা কেন্দ্র বা ডেস্ক নেই। তবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ মিশনগুলো সব ধরনের আইনি সহায়তা প্রদান করে থাকে।
এ কে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, আইনি সহায়তার লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বাজেটে আলাদা একটা বাজেট কোড রয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে সেই বাজেট কোডের বিপরীতে ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রবাসে জেলে আটকে পড়া বা অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যায় পড়া বাংলাদেশিদের সহায়তার জন্য দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত চাহিদা অনুযায়ী মন্ত্রণালয় অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে।